"ট" তে ট্রাফিক পুলিশ ঐ আসছে তেড়ে...
মূল লেখকঃ জনাব আসিফ রহমান জয়
পর্ব-১
ট্রাফিক পুলিশ কেন যেন আমাকে সহ্য করতে পারে না!
আমাকে বাইকের উপর দেখলেই হয় তাদের মেজাজ খারাপ হয়ে যায় অথবা গা চিড়বিড় করতে থাকে। অথবা এমন হতে পারে যে, আমার চেহারায় নিশ্চই এমন কিছু খুজে পায় যা দেখে তাদের মনে হয় এই ব্যাটা নিশ্চই ছেঁচড়া-সন্ত্রাসী বা পুটি মাস্তান। মোট কথা সুযোগ পেলেই তারা আমাকে যখন-তখন চলন্ত অবস্থায় থামিয়ে দেয়!
তবে আমার নিজেরও প্রব্লেম আছে। রাস্তায় পুলিশের নীল ড্রেস বা এর উপর হলুদ রঙের পাতলা হাফ জ্যাকেট দেখলেই, কোন কারন ছাড়াই আমার বুকের মধ্যে একটু জোরে ধুক ধুক শুরু হয়ে যায়, কেন হয় কে জানে!
পুলিশ রাস্তায় থামিয়ে যখন জিজ্ঞেস করেন যে-'কি নাম? কোথায় যাচ্ছেন? কোথা থেকে আসছেন? কি করেন?' আমি তখন কেন জানি বেমালুম সব ভুলে যাই। কোন কারন ছাড়াই ঘন ঘন ঢোক গিলে ইতস্ততঃ উত্তর দিই-'জি...আমি আমি...মানে...আমার নাম আসিফ রহমান...আমি একজন...'। আমার সন্দেহজনকভাবে ঢোক গেলা এবং ভয় পাওয়া চেহারা আর থতমত মার্কা উত্তর শুনে পুলিশ কনফিডেন্টলি আমাকে বলে-
-'বাইক সাইড করেন...দেখি আপনার কাগজপত্র দেখান...'
পাশের বাসার জয়ন্ত'দা অনেক দিন ধরেই বাইক চালান। উনি বার বার শিখিয়েছিলেন যে, পুলিশ রাস্তায় জিজ্ঞেস করলে কিভাবে কনফিডেন্টলি উত্তর দিতে হয়। বলেছিলেন যে, পুলিশ কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই 'রেলগাড়ি ঝমাঝম' এর মতো ফুল স্পিডে বলে যেতে হবে-'আমার নাম অমুক, বাবার নাম অমুক, বাড়ীর ঠিকানা-এতো বাই এতো, ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। চাকরী করি অমুক কোম্পানীতে...ইত্যাদি ইত্যাদি।'...ব্যস! কেল্লা ফতে...দেখবেন আপনার উত্তর পুরোপুরি শেষ করার আগেই পুলিশ বলবে-'যান ভাই...যান।' সবই হলো কনফিডেন্সের খেলা। আপনি কনফিডেন্স দেখাবেন, পুলিশ কনফিডেন্স হারিয়ে ফেলবে।
কিন্তু আমি কনফিডেন্টলি বলতে পারি না। কেন জানি, থতমত খেয়ে যাই। পুলিশ আমার থতমত চেহারা দেখে কনফিডেন্টলি বলে যে, বাইক সাইডে নেন। তাদের চেহারায় বেশ একটা –'পাইছি পাইছি' ভাব ফুটে ওঠে। তারপর ইচ্ছামতো আমার ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ীর কাগজ, ইন্সুরেন্স, ব্যাগ সব চেক করে হতাশ মুখে বলে-'যান ভাই...যান।' আমার অনেক ইচ্ছা করে জিজ্ঞেস করি, ভাই...আমি কেন? রাস্তায় এতো বাইক থাকতে আমাকে কেন থামালেন? কনফিডেন্সের অভাবে জিজ্ঞেস করতে পারি না।
আবার কনফিডেনস বেশী থাকলেও বিপদ। ওভার কনফিডেনসের জন্য অনেক সময় প্রাক্টিস করা উত্তরগুলো 'হ-য-ব-র-ল' হয়ে যায়। অনেক বছর আগের কথা, তখন আমি মীরপুর থাকি, অফিস বনানীতে। প্রতিদিন মীরপুর দশ এর গোল চক্কর থেকে ইব্রাহীমপুর-কচুক্ষেত-সৈনিক ক্লাব হয়ে বনানী যাই। ক্যান্টনমেন্টে ঢোকার পথে যদি বলি যে মীরপুর থেকে এসেছি তাহলে আর ঢুকতে দেয় না, ঘুরিয়ে দিয়ে বলে যে-'শ্যাওড়াপাড়া-বিজয়স্মরনী-মহাখালী হয়ে যান'-এ এক আজব নিয়ম। তখনো বনানী ফ্লাইওভার (ক্যান্টনমেন্ট এর উপর দিয়ে) হয়নি, মীরপুর থেকে বনানী ঘুরে গেলে দুই ঘন্টা লেগে যাবে। আর ক্যান্টনমেন্ট দিয়ে যেতে হলে বলতে হবে যে, আমি ইব্রাহিমপুর থাকি অথবা কচুক্ষেত থাকি, মীরপুর বলা যাবে না। আমি সারারাস্তা প্রাকটিস করতে করতে আসলাম যে বলবো-'আমি ইব্রাহীম্পুর থাকি...৬২৫/ এ, ইব্রাহীম্পুর।' বলাই বাহুল্য যে, এই ঠিকানা আদৌ আছে কিনা, তা আমি নিজেও জানিনা। ক্যান্টনমেন্টে ঢোকার সময় জিজ্ঞেস করতেই আমি হড়বড় করে বলে ফেললাম-'৬২৫/এ, ইসালামাবাদ...আমি ইসালামাবাদ থাকি।' বলেই বুঝলাম-যাহ বাবা...ভুল হয়ে গেছে। চেক পোস্টের পুলিশ কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে 'ফ্যাক' করে হেসে দিলো। ঢুকতে দিয়ে বললো-'যান... তবে বাসাটা এর পর থেকে ইসালামাবাদ না বলে আশে-পাশে কোথাও বলবেন।'
ট্রাফিক পুলিশ যে সবসময় মুখ গোমরা করে থাকে ব্যাপারটা তা না। মাঝে মাঝে বা কখনো সখনো কোন উদ্ভট পরিস্থিতিতে তারাও হাসে বা হেসে ফেলে বা হাসতে বাধ্য হয়। এরকমই একটা হাসির কথা বলি। ট্রাফিক পুলিশের নিয়ম হলো যে, আপনি যদি রাস্তায় কোন ট্রাফিকের আইন ভংগ করেন তবে সে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স বা গাড়ির কাগজ বা ইন্সুরেন্সের কাগজ এগুলোর যেকোন একটা রেখে দেবে আর আপনার নামে জরিমানা দিয়ে মামলা করবে। পরবর্তীতে আপনি নির্দিষ্ট দিনে সেই মামলার কাগজ মোতাবেক জরিমানা দিয়ে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স বা গাড়ির কাগজ বা ইন্সুরেন্সের কাগজ ছাড়িয়ে নেবেন।
একদিন হলো কি, আমি কামাল আতার্তুক এভিনিউয়ের মোড়ে রঙ সাইড দিয়ে বাইক চালিয়ে আসছি। মোড়ের কাছে আসতেই ফুটপাতে লোকজনের ভিড় থেকে এক ট্রাফিক পুলিশ আচানক বের হয়ে এলো। কি মুশকিল! দূর থেকে দেখেছি এখানে কোন পুলিশ নেই...তাই রঙ সাইড দিয়ে এসেছি। এই ব্যাটা যে, ফুটপাতে লোকজনের ভিড়ে মিশে ছিলো, তা কে জানে? পুলিশ এসেই বাইক ধরে বললো-'বাইক সাইড করেন...আপনার পরিচয় কি? রং সাইড দিয়ে এলেন কেন?' বলাই বাহুল্য, যতোই কনফিডেন্স দেখাই বা যতোই পরিচয় দিই, রঙ সাইড দিয়ে এসে নিশ্চই অন্যায় করেছি। কাজেই, আমি আমতা আমতা করতে লাগলাম। পুলিশ হেভী মুডে বললো-'দেখি আপনার গাড়ির কাগজ বের করেন।' আমার বাইকের কাগজগুলো একটা ছোট হ্যান্ড ব্যাগে থাকে। আমি হ্যান্ড-ব্যাগটা তাকে দেওয়ার কিছুক্ষন পরই সে হো হো করে হেসে দিলো। আমি ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলাম-'কি হয়েছে ভাই...হাসেন কেন?' পুলিশ হাসতে হাসতেই বললো-'দূর ভাই... আপনার সবগুলো কাগজের এগেনস্টে একটা করে মামলা দেয়া আছে। আমি আর মামলা দেব কোথায়? যান এখান থেকে... উল্টা-পাল্টা রাস্তায় গাড়ি চালাবেন না।'
আরেকবার হলো কি-ফুটপাত দিয়ে গাড়ি চালিয়ে আসছি। পুলিশ আটকে দিলো। বললো-'আপনি ফুটপাতের উপর কি করেন? দেখি গাড়ীর কাগজ...'।
আমি সরল মুখে বললাম-'বাইক না ফুটপাতে চালানো যায়? আমাকে তো বাইক কেনার সময় দোকান থেকে তাই বললো যে, বাইক কিনলে, রাস্তায় জ্যামের মধ্যে পড়লে আপনি যখন-তখন ফুটপাতের উপর দিয়ে বাইক চালাতে পারবেন।'
পুলিশ ভাই কিছুক্ষন আমার দিকে হা করে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো। বোঝার চেষ্টা করলো যে, আসলেই দোকান থেকে আমাকে এই কথা বলেছে নাকি আমি মিথ্যা কথা বলছি। আমিও আমার চেহারায় যতোদূর সম্ভব একধরনের 'গো-বেচারা' টাইপ একটা ভালোমানুষি ভাব ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করলাম। কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকার পর পুলিশ হো হো করে হেসে দিলো। হেসে দিয়ে বললো-'ভাই...বাইক নিয়ে নীচে নামেন...আর রাস্তা ঘাটে ফাজলামি একটু কম করবেন।'
মূল লেখকঃ জনাব আসিফ রহমান জয়
পর্ব-১
ট্রাফিক পুলিশ কেন যেন আমাকে সহ্য করতে পারে না!
আমাকে বাইকের উপর দেখলেই হয় তাদের মেজাজ খারাপ হয়ে যায় অথবা গা চিড়বিড় করতে থাকে। অথবা এমন হতে পারে যে, আমার চেহারায় নিশ্চই এমন কিছু খুজে পায় যা দেখে তাদের মনে হয় এই ব্যাটা নিশ্চই ছেঁচড়া-সন্ত্রাসী বা পুটি মাস্তান। মোট কথা সুযোগ পেলেই তারা আমাকে যখন-তখন চলন্ত অবস্থায় থামিয়ে দেয়!
তবে আমার নিজেরও প্রব্লেম আছে। রাস্তায় পুলিশের নীল ড্রেস বা এর উপর হলুদ রঙের পাতলা হাফ জ্যাকেট দেখলেই, কোন কারন ছাড়াই আমার বুকের মধ্যে একটু জোরে ধুক ধুক শুরু হয়ে যায়, কেন হয় কে জানে!
পুলিশ রাস্তায় থামিয়ে যখন জিজ্ঞেস করেন যে-'কি নাম? কোথায় যাচ্ছেন? কোথা থেকে আসছেন? কি করেন?' আমি তখন কেন জানি বেমালুম সব ভুলে যাই। কোন কারন ছাড়াই ঘন ঘন ঢোক গিলে ইতস্ততঃ উত্তর দিই-'জি...আমি আমি...মানে...আমার নাম আসিফ রহমান...আমি একজন...'। আমার সন্দেহজনকভাবে ঢোক গেলা এবং ভয় পাওয়া চেহারা আর থতমত মার্কা উত্তর শুনে পুলিশ কনফিডেন্টলি আমাকে বলে-
-'বাইক সাইড করেন...দেখি আপনার কাগজপত্র দেখান...'
পাশের বাসার জয়ন্ত'দা অনেক দিন ধরেই বাইক চালান। উনি বার বার শিখিয়েছিলেন যে, পুলিশ রাস্তায় জিজ্ঞেস করলে কিভাবে কনফিডেন্টলি উত্তর দিতে হয়। বলেছিলেন যে, পুলিশ কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই 'রেলগাড়ি ঝমাঝম' এর মতো ফুল স্পিডে বলে যেতে হবে-'আমার নাম অমুক, বাবার নাম অমুক, বাড়ীর ঠিকানা-এতো বাই এতো, ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। চাকরী করি অমুক কোম্পানীতে...ইত্যাদি ইত্যাদি।'...ব্যস! কেল্লা ফতে...দেখবেন আপনার উত্তর পুরোপুরি শেষ করার আগেই পুলিশ বলবে-'যান ভাই...যান।' সবই হলো কনফিডেন্সের খেলা। আপনি কনফিডেন্স দেখাবেন, পুলিশ কনফিডেন্স হারিয়ে ফেলবে।
কিন্তু আমি কনফিডেন্টলি বলতে পারি না। কেন জানি, থতমত খেয়ে যাই। পুলিশ আমার থতমত চেহারা দেখে কনফিডেন্টলি বলে যে, বাইক সাইডে নেন। তাদের চেহারায় বেশ একটা –'পাইছি পাইছি' ভাব ফুটে ওঠে। তারপর ইচ্ছামতো আমার ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ীর কাগজ, ইন্সুরেন্স, ব্যাগ সব চেক করে হতাশ মুখে বলে-'যান ভাই...যান।' আমার অনেক ইচ্ছা করে জিজ্ঞেস করি, ভাই...আমি কেন? রাস্তায় এতো বাইক থাকতে আমাকে কেন থামালেন? কনফিডেন্সের অভাবে জিজ্ঞেস করতে পারি না।
আবার কনফিডেনস বেশী থাকলেও বিপদ। ওভার কনফিডেনসের জন্য অনেক সময় প্রাক্টিস করা উত্তরগুলো 'হ-য-ব-র-ল' হয়ে যায়। অনেক বছর আগের কথা, তখন আমি মীরপুর থাকি, অফিস বনানীতে। প্রতিদিন মীরপুর দশ এর গোল চক্কর থেকে ইব্রাহীমপুর-কচুক্ষেত-সৈনিক ক্লাব হয়ে বনানী যাই। ক্যান্টনমেন্টে ঢোকার পথে যদি বলি যে মীরপুর থেকে এসেছি তাহলে আর ঢুকতে দেয় না, ঘুরিয়ে দিয়ে বলে যে-'শ্যাওড়াপাড়া-বিজয়স্মরনী-মহাখালী হয়ে যান'-এ এক আজব নিয়ম। তখনো বনানী ফ্লাইওভার (ক্যান্টনমেন্ট এর উপর দিয়ে) হয়নি, মীরপুর থেকে বনানী ঘুরে গেলে দুই ঘন্টা লেগে যাবে। আর ক্যান্টনমেন্ট দিয়ে যেতে হলে বলতে হবে যে, আমি ইব্রাহিমপুর থাকি অথবা কচুক্ষেত থাকি, মীরপুর বলা যাবে না। আমি সারারাস্তা প্রাকটিস করতে করতে আসলাম যে বলবো-'আমি ইব্রাহীম্পুর থাকি...৬২৫/ এ, ইব্রাহীম্পুর।' বলাই বাহুল্য যে, এই ঠিকানা আদৌ আছে কিনা, তা আমি নিজেও জানিনা। ক্যান্টনমেন্টে ঢোকার সময় জিজ্ঞেস করতেই আমি হড়বড় করে বলে ফেললাম-'৬২৫/এ, ইসালামাবাদ...আমি ইসালামাবাদ থাকি।' বলেই বুঝলাম-যাহ বাবা...ভুল হয়ে গেছে। চেক পোস্টের পুলিশ কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে 'ফ্যাক' করে হেসে দিলো। ঢুকতে দিয়ে বললো-'যান... তবে বাসাটা এর পর থেকে ইসালামাবাদ না বলে আশে-পাশে কোথাও বলবেন।'
ট্রাফিক পুলিশ যে সবসময় মুখ গোমরা করে থাকে ব্যাপারটা তা না। মাঝে মাঝে বা কখনো সখনো কোন উদ্ভট পরিস্থিতিতে তারাও হাসে বা হেসে ফেলে বা হাসতে বাধ্য হয়। এরকমই একটা হাসির কথা বলি। ট্রাফিক পুলিশের নিয়ম হলো যে, আপনি যদি রাস্তায় কোন ট্রাফিকের আইন ভংগ করেন তবে সে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স বা গাড়ির কাগজ বা ইন্সুরেন্সের কাগজ এগুলোর যেকোন একটা রেখে দেবে আর আপনার নামে জরিমানা দিয়ে মামলা করবে। পরবর্তীতে আপনি নির্দিষ্ট দিনে সেই মামলার কাগজ মোতাবেক জরিমানা দিয়ে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স বা গাড়ির কাগজ বা ইন্সুরেন্সের কাগজ ছাড়িয়ে নেবেন।
একদিন হলো কি, আমি কামাল আতার্তুক এভিনিউয়ের মোড়ে রঙ সাইড দিয়ে বাইক চালিয়ে আসছি। মোড়ের কাছে আসতেই ফুটপাতে লোকজনের ভিড় থেকে এক ট্রাফিক পুলিশ আচানক বের হয়ে এলো। কি মুশকিল! দূর থেকে দেখেছি এখানে কোন পুলিশ নেই...তাই রঙ সাইড দিয়ে এসেছি। এই ব্যাটা যে, ফুটপাতে লোকজনের ভিড়ে মিশে ছিলো, তা কে জানে? পুলিশ এসেই বাইক ধরে বললো-'বাইক সাইড করেন...আপনার পরিচয় কি? রং সাইড দিয়ে এলেন কেন?' বলাই বাহুল্য, যতোই কনফিডেন্স দেখাই বা যতোই পরিচয় দিই, রঙ সাইড দিয়ে এসে নিশ্চই অন্যায় করেছি। কাজেই, আমি আমতা আমতা করতে লাগলাম। পুলিশ হেভী মুডে বললো-'দেখি আপনার গাড়ির কাগজ বের করেন।' আমার বাইকের কাগজগুলো একটা ছোট হ্যান্ড ব্যাগে থাকে। আমি হ্যান্ড-ব্যাগটা তাকে দেওয়ার কিছুক্ষন পরই সে হো হো করে হেসে দিলো। আমি ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলাম-'কি হয়েছে ভাই...হাসেন কেন?' পুলিশ হাসতে হাসতেই বললো-'দূর ভাই... আপনার সবগুলো কাগজের এগেনস্টে একটা করে মামলা দেয়া আছে। আমি আর মামলা দেব কোথায়? যান এখান থেকে... উল্টা-পাল্টা রাস্তায় গাড়ি চালাবেন না।'
আরেকবার হলো কি-ফুটপাত দিয়ে গাড়ি চালিয়ে আসছি। পুলিশ আটকে দিলো। বললো-'আপনি ফুটপাতের উপর কি করেন? দেখি গাড়ীর কাগজ...'।
আমি সরল মুখে বললাম-'বাইক না ফুটপাতে চালানো যায়? আমাকে তো বাইক কেনার সময় দোকান থেকে তাই বললো যে, বাইক কিনলে, রাস্তায় জ্যামের মধ্যে পড়লে আপনি যখন-তখন ফুটপাতের উপর দিয়ে বাইক চালাতে পারবেন।'
পুলিশ ভাই কিছুক্ষন আমার দিকে হা করে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো। বোঝার চেষ্টা করলো যে, আসলেই দোকান থেকে আমাকে এই কথা বলেছে নাকি আমি মিথ্যা কথা বলছি। আমিও আমার চেহারায় যতোদূর সম্ভব একধরনের 'গো-বেচারা' টাইপ একটা ভালোমানুষি ভাব ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করলাম। কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকার পর পুলিশ হো হো করে হেসে দিলো। হেসে দিয়ে বললো-'ভাই...বাইক নিয়ে নীচে নামেন...আর রাস্তা ঘাটে ফাজলামি একটু কম করবেন।'