দক্ষিণ আফ্রিকার সিরিজ জয় এক প্রকার নিশ্চিতই।
জোহানেসবার্গ টেস্ট ড্র হলেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠে ১৯৭০ সালের পর প্রথমবারের মতো সিরিজ জিতবে দক্ষিণ আফ্রিকা। সিরিজের চতুর্থ এই টেস্টে আর যা-ই হোক, অস্ট্রেলিয়ার জয়ের সম্ভাবনা নেই। ৬১২ রানের অসম্ভব এক লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে চতুর্থ দিন শেষে অসিদের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৮৮ রান। এখনো দরকার ৫২৪ রান। শেষ দিনে তাদের ৭ উইকেট তুলে নিতে পারলেই ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতবে দক্ষিণ আফ্রিকা। ড্র হলেও প্রোটিয়ারা সিরিজ জিতবে ২-১ ব্যবধানে।
আগের দিনই দক্ষিণ আফ্রিকার লিড চারশ ছাড়িয়েছিল, ৪০১। আজ শেষ দিনে সেই লিড বেড়ে ৪৫০, ৫০০, ৫৫০, ৬০০ হয়েছে, তবুও ইনিংস ঘোষণা করার নাম নেই! মূল কারণটা হতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকার তিন পেসার- মরনে মরকেল, কাগিসো রাবাদা ও ভারনন ফিল্যান্ডার। সবাই ভিন্ন ভিন্ন চোটে ভুগছেন। পেসারদের যতটা সম্ভব বিশ্রাম দিতেই ইনিংস ঘোষণা করতে দেরি করছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি।
দ্বিতীয় ইনিংসের ৩ উইকেটে ১৩৪ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ডিন এলগার ৩৯ ও ডু প্লেসি ব্যাটিং শুরু করেন ৩৪ রান নিয়ে। সেটিকে আজ ফিফটি, পরে সেঞ্চুরিতে রূপান্তর করেন ডু প্লেসি। অথচ আগের দিন চ্যাড সেয়ার্সের বলে আঙুলে আঘাত পেয়েছিলেন, আজ গ্লাভসের ওপরে ব্যান্ডেজ নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। দিনের শুরুতে সেই আঙুলেই আরেকবার আঘাত পান প্যাট কামিন্সের বলে! সেই আঙুল নিয়েই ২০১৭ সালের অক্টোবরের পর পেয়েছেন প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি।
ডু প্লেসি ১২০ রান (১৮ চার, ২ ছক্কা) করে ফিরলে ভাঙে ডিন এলগারের সঙ্গে তার ১৭০ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি। আগের দিনে এলগারের ধীরগতির ব্যাটিংটা এদিন আরো মন্থর হয়ে গেছে। ৮১ রান করে যখন ফিরলেন, তার নামের পাশে ২৫০ বল! ১০ চার ও এক ছক্কায় ইনিংসটি সাজিয়েছেন বাঁহাতি এই ওপেনার।
চা বিরতি পর্যন্তও ইনিংস ঘোষণা করেননি ডু প্লেসি। টেম্বা বাভুমা ৩৫ ও ফিল্যান্ডার ৩৩ রান নিয়ে যান বিরতিতে। দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ তখন ৬ উইকেটে ৩৪৪। অবশেষে বিরতির সময়েই এলো বহুল প্রতীক্ষিত সেই ঘোষণা। অস্ট্রেলিয়ার সামনে তখন ৬১২ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য।
ম্যাচ বাঁচানোর লক্ষ্যে খেলতে নামা অস্ট্রেলিয়া প্রথম ১২ ওভার কাটিয়ে দিয়েছিল নিরাপদেই। ১৩তম ওভারে ম্যাট রেনশকে (৫) এলবিডব্লিউ করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথম সাফল্য এনে দেন মরকেল। তিনে নামা উসমান খাজা ১২ বলের বেশি টিকতে পারেননি। খাজাকে (৭) এলবিডব্লিউ করেন স্পিনার কেশব মহারাজ। অস্ট্রেলিয়ার স্কোর তখন ২ উইকেটে ৩৪।
তৃতীয় উইকেটে প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন জো বার্নস ও পিটার হ্যান্ডসকম্ব। আরেক ওপেনার বার্নসকেও এলবিডব্লিউ করে ৩৪ রানের এ জুটি ভাঙেন মরকেল। এরপর আলোকস্বল্পতায় দিনের খেলা শেষ হয়ে গেছে আগেভাগেই। হ্যান্ডসকম্ব ২৩ ও শন মার্শ ৭ রানে অপরাজিত আছেন।
আগের টেস্টে বল টেম্পারিংয়ের ঘটনায় স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার ও ক্যামেরন ব্যানক্রফট নিষিদ্ধ হওয়ার পরই মনের জোর হারিয়ে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া। খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সেও সেটার প্রভাব স্পষ্ট। সিরিজ শেষে দেশে ফিরলেই যেন বাঁচেন বাকি সদস্যরা!
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৪৮৮ ও ২য় ইনিংস: ৩৪৪/৬ ডিক্লে.
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ২২১ ও ২য় ইনিংস (লক্ষ্য ৬১২) : ৮৮/৩