সৃষ্টিকর্তা যেমন এই পৃথিবীকে সৌন্দর্য দিয়ে সাজিয়েছেন। ঠিক তেমনি এর বিভিন্ন স্থানে পুতে রেখেছেন নানান রহস্যের বীজ। তাইতো পৃথিবীতে রহস্যের কোন শেষ নেই। এসব রহস্য চিরকালই আকর্ষণ করে মানুষকে।তেমনই রহস্যময় একটি স্থাপনার নাম নিউপোর্ট টাওয়ার। কি এই নিউপোর্ট টাওয়ার, কি তার রহস্য – আজ তাই জানবো আমরা।
নিউপোর্ট টাওয়ার এর অবস্থান
সম্পূর্ণ গোলাকৃতির প্রাচীন এই টাওয়ারটি যুক্তরাষ্ট্রের রোডস আইল্যান্ডের নিউপোর্ট এলাকার টাউরো পার্কে অবস্থিত। সম্পূর্ণ পাথরের তৈরি টাওয়ারটি নির্মাণ করা হয় ১৭ শতকের মাঝামাঝিতে। এটি দাঁড়িয়ে আছে আটটি কলামের ওপর। যার মধ্যে দুটি কলাম অন্য ছয়টি কলামের চেয়ে আকারে বড়। কলামগুলোর গায়ে দাগ কেটে আঁকা হয়েছেনানা প্রজাতির প্রাণীর ছবি, নাম ও আরও অনেক চিত্র। কিন্তু টাওয়ারের গায়ে এসব কে এঁকেছে, কেন এঁকেছে তা সঠিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি কখনও।
নিউপোর্ট টাওয়ারকে কেনো রহস্যময় বলা হয়?
ইতিহাস বলে, আমেরিকান বিপ্লবের পর থেকে এই টাওয়ারকে রহস্যময় টাওয়ার বলা হয়। কেউ কেউ বলেন, এর ভেতর থেকে মৃতের কান্নার আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায়। কেউ বলেছেন, এখানে অচেনা স্বরে কথা বলে কেউ। নিউপর্ট টাওয়ারে সামনে দিয়ে একা একা হেঁটে যাওয়ার সময় অনেকেই শুনতে পেয়েছেন তাদের নাম ধরে অচেনা কেউ একজন ডাকছে। কিন্তু কে ডাকছে তা দেখা যায়নি। এমনকি এই স্থানে গিয়ে অনেকে হারিয়ে গিয়েছেন বলেও লোকমুখে শোনা যায়।
নিউপোর্ট টাওয়ার এর রহস্য নিয়ে যত গবেষণা
জিম ব্রানডন নামের এক আমেরিকান গবেষক ও প্রকৌশলী নিউপোর্ট টাওয়ারকে কেন রহস্যজনক টাওয়ার বলা হয় এর কারণ অনুসন্ধান করার চেষ্টা করেছেন। তিনি প্রাচীন এই টাওয়ারের নানা উপকরণ, লেখা, কারুকাজ নিয়ে প্রায় এক বছর গবেষণা করে দেখেছেন। তার গবেষণা থেকে উঠে এসেছে নানান চাঞ্চল্যকর তথ্য। নিউপোর্ট টাওয়ারটি যে পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে তা প্রাচীন চুম্বক জাতীয় পাথর। এ ধরনের পাথরের অবস্থান মাটির অনেক নিচে। প্রাচীন কালে এই সব পাথর মাটির নিচ থেকে খুড়ে বের করার মতো কোন প্রযুক্তি ছিল না। তাহলে এই পাথর মানুষ কীভাবে পেল? এই প্রশ্নের উত্তর গবেষক নিজেও দিতে পারেন নি। হিস্টোরি সাইটে এই নিয়ে সার্বিক গবেষণা করা হয়েছে "দা অন গোয়িং মিস্টেরি" আর্টিকেলটিতে।
নিউপোর্ট টাওয়ার আরও যেসব গুজব শোনা যায়
ম্যাগনেট ছাড়াও টাওয়ারের তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় পাওয়া গেছে মানুষের পায়ের চিহ্ন, প্রাচীন নকশা, মানুষের মাথার খুলি। এ থেকে অনুমান করা হয়, প্রাচীনকালে বা আমেরিকান বিপ্লবের সময় টাওয়ারটিতে মানুষ হত্যা করা হতো। অপরাধীকে এখানেই ফাঁসিতে ঝুলানো হতো। অতি উৎসাহী অনেকে বলে থাকেন, গভীর রাতে নিউপোর্টে কান পেতে থাকলে শোনা যায়, দূর থেকে কান্নার শব্দ ভেসে আসছে।
গবেষণা অনেক হয়েছে। জানা গেছে অনেক তথ্য। কিন্তু নিউপোর্ট টাওয়ার নিয়ে যেসব রহস্যময় ঘটনা ঘটে গেছে, তার পেছনে আসল কারনটি আজও মানুষের অজানা রয়ে গেছে।