What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other যৌথ প্রযোজনার ছবি গাছে ধরে! (1 Viewer)

Placebo

Mega Poster
Elite Leader
Joined
Jul 31, 2018
Threads
847
Messages
16,671
Credits
181,489
Recipe soup
Onion
nA7uEyQ.jpg


ইদানিং "যৌথ প্রযোজনা"র চলচ্চিত্র যে হারে মুক্তি পাচ্ছে তা দেখে মনে হয় যৌথ প্রযোজনার ছবি গাছে ধরে যা ঝাঁকা মারলেই মাটিতে পড়ে। আবার এটাও শুনি যে এখন যৌথ প্রযোজনার নামে নাকি যৌথ প্রতারণা চলছে। অথচ এই গাছে ধরা যৌথ প্রতারণা করার সুযোগ আজ কে বা কারা করে দিচ্ছে সেটা নিয়ে কেউ কিছু বলেনা। "যৌথ প্রযোজনা" আজ নতুন কিছু নয়। সেই আলমগির কবিরের "ধীরে বহে মেঘনা" থেকে যৌথ প্রযোজনার শুরু যারপর আমরা পেয়েছিলাম "সীমানা পেরিয়ে", "লাভ ইন সিঙ্গাপুর", " নেপালি মেয়ে", "দূরদেশ", "মিস লংকা", "বিরোধ", "অবিচার", "বলবান", "আপোষ", "ব্যবধান", "বাপের বেটা", "দুনিয়া", "দেশ বিদেশ", "প্রতারক", "ঝড় তুফান", "লাভ ইন আমেরিকা' সহ অনেকগুলো যৌথ প্রযোজনার ছবি। যে ছবিগুলো ভারত, পাকিস্থান, শ্রীলংকার মতো দেশগুলোর সাথে মিলিতভাবে নির্মিত হয়েছিল এবং কোন দেশের প্রযোজক, পরিচালক বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করার মতো সাহস দেখায়নি। আমাদের প্রযোজক পরিচালকরা ঠিকই আমাদের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখেই যৌথ প্রযোজনার ছবি নির্মিত করেছিলেন। কোন ছবির মাঝে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের শিল্পিকে বিকৃত ভাবে উপস্থাপন করা হয়নি।

এই প্রসঙ্গে ১৯৮৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত "বিরোধ" ছবিটির উদাহরণ দেয়া যায়।"বিরোধ " ছবিটির হিন্দি ভার্শন "শক্তি" নামে আগে [১৯৮৫] সালে মুক্তি দেয়া হয়েছিল যা পরবর্তীতে বাংলায় ১৯৮৬ সালে মুক্তি দেয়া হয়। বলিউডের মহানায়ক রাজেশ খান্না, শক্তিমান অভিনেতা প্রেম চোপরা অভিনীত একটি দুর্দান্ত ছবি ছিল "বিরোধ" যা আমার দেখা এখন পর্যন্ত যৌথ প্রযোজনার শ্রেষ্ঠ ছবি। বিরোধ ছবির পুরোটা জুড়েই রাজেশ খান্না, প্রেম চোপড়া এবং মাস্টার তাপ্পুর মুগ্ধ করা অভিনয় যেখানে শাবানা ছিলেন খুবই অল্প সময়ের জন্য। কিন্তু তারপরেও ছবিটিকে একবারও মনে হয়নি ছবিটি বাংলাদেশের নয়। বারবার বাংলার কথা উঠে এসেছে ছবিটির মাঝে। আমাদের কণ্ঠশিল্পী অ্যান্ড্রো কিশোরের কণ্ঠে ছবির টাইটেল গান "আজো বয়ে চলে পদ্মা মেঘনা বুড়িগঙ্গার ধারা" শিরোনামে গানটি দিয়ে ছবিটি শুরু হয়। গৌরি প্রসন্নের লিখা ও রাহুল দেব বর্মণের সুরে সাবিনা ইয়াসমিনের কণ্ঠে ছিল "তোর আঁচলে মমতারই ছায়া " শিরোনামে ছবির সবচেয়ে সেরা গানটি। পরিবারের সাথে সিলেটের অবকাশ সিনেমা হলে ছবিটি দেখার স্মৃতি আজো আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। হলভর্তি দর্শকদের মুহুর্মুহু করতালির শব্দ আজো কানে বাজে। সেই ছবির একটি জনপ্রিয় সংলাপ ছিল "তুমি তোমার ঠিকানা খুঁজে নাও, আমি তোমাকে ঠিকই খুঁজে নিবো" । বিরোধ ছবির একটি আইটেম গানে ছিলেন আমাদের অভিনেত্রী নূতন। অর্থাৎ বিরোধ ছবিতে খুব গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে বাংলাদেশের অভিনেতা অভিনেত্রী ছিলেন কম কিন্তু তারপরেও ছবিটি বাংলাদেশের শিল্পী, দর্শকদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করেনি। কেউ বলতে পারবে না "বিরোধ" ছবিটি যৌথ প্রযোজনার নামে "যৌথ প্রতারণা" করেছে।

আজ কেন বারবার যৌথ প্রতারণার দাবী উঠলেও প্রতারণা থামছে না বরং বেড়েছে সেটা কি কেউ ভেবে দেখেছেন? তার কারণ হলো আজ আমাদের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিকে কলকাতার প্রযোজক পরিচালক ও শিল্পিরা খুব দুর্বল মনে করে এবং বাংলাদেশের বাজারে যৌথ প্রযোজনার নামে মূলত কলকাতার ছবির বাজার প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। কলকাতা আজ আমাদের দুর্বল ভেবে করুণা করছে অথচ এই কলকাতার শিল্পিরা একদিন বাংলাদশের মূলধারার চলচ্চিত্রে অভিনয় করাটাকে অনেক বড় পাওয়া মনে করতো। বাংলাদেশের অসংখ্য ব্যবসা সফল ছবিকে কলকাতা নকল করে তাদের দেশে চালাতো আর আজ তারাই আমাদের পিঠে ছড়ি ঘুরাচ্ছে। এর কারণ আমাদের চলচ্চিত্রে আজ প্রযোজক, পরিচালক ও শিল্পী যারা রয়েছেন তারা নিজেদের স্বার্থটাকেই বড় করে দেখে তাতে দেশের মুখ বড় কি ছোট হলো সেই চিন্তা করেনা। কারো মনে বাংলাদেশের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রাখার প্রত্যয় নেই। যারা আজ টিকে আছে সব হলো ধান্দাবাজ শ্রেণীর যারা মুখে বড় বড় আশার কথা শোনায় কিন্তু কাজের বেলায় একেবারে বিপরীত। যারা নিজেদের স্বার্থটুকু রক্ষা করার জন্য কলকাতার প্রতি সোচ্চার হওয়ার সাহস দেখাতে পারেনা।

দুদিন আগে দেখলাম কোন এক নায়কের ভক্তকুল জ্যাজের প্রশংসায় পঞ্চমুখ যারা ভেবেছে জ্যাজের ছবি দিয়ে উনাদের প্রিয় নায়ক বিরাট কিছু করে ফেলবেন কিন্তু একবারও ভেবে দেখেনি যে সব হলো শুভঙ্করের ফাঁকি। আমাদের প্রযোজক পরিচালক ও শিল্পীদের নির্লিপ্ততা কলকাতাকে সাহস যোগায় বারবার প্রতারণা করার জন্য। আমাদের প্রযোজক, পরিচালক ও শিল্পীরা আজ লোভে অন্ধ যার সুযোগটা কলকাতা খুব কৌশলে ভালোভাবে ব্যবহার করে যাচ্ছে। একটি মানুষও সঠিক কথা বলে অনিয়মদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার সাহস দেখায় না। ইন্ডাস্ট্রির তথাকথিত ১নং নায়ক যখন নিজের স্বার্থে অন্ধ হয়ে বারবার ফাঁদে পা দেয় তখন তা অন্যদের কাছে অনুকরণীয় হয়ে উঠে।

একদিন যে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে একেএম জাহাঙ্গীর খান, সফর আলী ভুঁইয়া, সুবিদ আলী ভুঁইয়া, শফি বিক্রম্পুরি, বজলুর রশিদ ঢালী, আজিজুর রহমান বুলি, মাসুদ পারভেজ, আজমল হুদা মিঠু, শাহ আলম খান , কে এম আর মঞ্জুর , ওয়াহিদ সাদিক , জসিম এর মতো বাঘা বাঘা প্রযোজকেরা ছিল যারা শুধু চলচ্চিত্র ব্যবসায়ী ছিলেন না ছিলেন মেধাবী ও সাহসী প্রযোজকও। সেখানে আজ আলু পটল ব্যবসায়ী কিংবা দু পা বিশিষ্ট কিছু গরু ছাগল চলচ্চিত্র নির্মাণের নামে দর্শকদের সাথে প্রতারণা করে আসছে। যে ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতারকে ভরপুর থাকে সেই ইন্ডাস্ট্রির সাথে অন্যরা প্রতারণা করবে নাতো কি করবে ?

যৌথ প্রযোজনার নামে যৌথ প্রতারণা ঠেকাতে হলে আগে নিজেদের শুদ্ধ করুন, আগে নিজেরা ঠিক হোন।।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top