র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট
২০২০ সালের গোড়া থেকেই শুরু হয় করোনাভাইরাসের দাপট। কিন্তু করোনাভাইরাস শনাক্ত করতে যে পিসিআর টেস্ট করা হয়, তা যেমন সময়সাপেক্ষ তেমনই ব্যয়বহুল। এ জন্য দরকার হয় অত্যাধুনিক গবেষণাগার আর প্রশিক্ষিত জনবল। এই সমস্যা সমাধানে আগস্টের মাঝামাঝি উদ্ভাবন হয় র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট। ড্রাইভিং লাইসেন্সের সমান কাগজের কার্ডে স্বাস্থ্যকর্মী দুই ফোঁটা বিকারক বা রিঅ্যাজেন্ট নেন আর আক্রান্তের নাক থেকে নমুনা নিয়ে তাতে মিশিয়ে ভাঁজ করেন। দুটো গোলাপি দাগ দেখা গেলে করোনা পজিটিভ ধরে নিতে হয়। এতে সময় লাগে ১৫ মিনিট, আর প্রায় ৯৭ শতাংশ নির্ভুল ফল দিতে সক্ষম।
পুনর্ব্যবহারযোগ্য মাস্ক
করোনা মহামারির শুরুর দিকে বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছিল ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী বিশেষ করে এন-৯৫ মাস্কের সংকট। এই সমস্যা সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) প্রথম উদ্ভাবন করে সহজ পদ্ধতি। তা হলো, একবার ব্যবহারের পর এন-৯৫ মাস্ক একটি কাগজের প্যাকেটে ৫ দিন রেখে আবার ব্যবহার করা সম্ভব। তবে এতে কার্যকারিতা কিছুটা কম। এরপর একে একে বাজারে আসে পুনর্ব্যবহারযোগ্য রেসপিরেটর। সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) উদ্ভাবন করেছে সিলিকন রাবারের তৈরি ফেস মাস্ক (আইমাস্ক), যা ব্যবহারের পর বাষ্প, ব্লিচ দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব, আর বারবার ব্যবহারে কার্যকর।
টেলিহেলথ সেবায় বিশেষ যন্ত্র
২০২০ সালে অভূতপূর্বভাবে ব্যবহৃত হয়েছে টেলিহেলথ সেবা, বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে। মানুষ ঘরে বসে নানা প্রযুক্তির সাহায্যে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আগ্রহী হয়েছেন। তাই বিজ্ঞানও মনোযোগ দিয়েছে এদিকে। শিগগিরই আসছে ইউএসবি সংযুক্ত চিকিৎসকদের ব্যবহারযোগ্য বিশেষ যন্ত্র, যাতে ১০ ধরনের পরীক্ষার উপাত্ত নেওয়া সম্ভব। স্পন্দন, রক্তচাপ, অক্সিজেন সেচুরেশন, তাপমাত্রা মাপার পাশাপাশি এতে থাকবে ইসিজি সেনসর, স্টেথিসকোপ, চোখের রেটিনা পরীক্ষার অফথালমোস্কোপ, কান পরীক্ষার অটোস্কোপ প্রভৃতিও। যন্ত্রটি একটি কফি মগের চেয়ে বড় নয়। এই প্রযুক্তি বাজারে এলে একজন প্রত্যন্ত এলাকার রোগী অনেক দূর থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সব ধরনের পরামর্শ সহজে নিতে পারবেন।
বহনযোগ্য স্বয়ংক্রিয় ডিফিব্রিলেটর
হার্ট অ্যাটাক বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের পর হৃৎস্পন্দন ফেরাতে তাৎক্ষণিক ডিফিব্রিলেশনের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই আসছে ছোট্ট মানিব্যাগের সমান বহনযোগ্য স্বয়ংক্রিয় ডিফিব্রিলেটর, যা ঝুঁকিপূর্ণ হৃদ্রোগীরা বাড়িতে রাখতে পারবেন। হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে কোনো চিকিৎসকের উপস্থিতি ছাড়াই একটি আঠালো প্যাডের সাহায্যে যন্ত্রটিকে আক্রান্ত ব্যক্তির বুকে লাগালে যন্ত্রটি নিজে নিজে হৃৎস্পন্দনের পরিবর্তন বুঝে ইলেকট্রিক শক দিতে সক্ষম।
স্লিপ এপনিয়া ঠেকাতে হাতঘড়ি
৮০ শতাংশ স্লিপ এপনিয়ার রোগী জানেন না যে তাঁদের এ রোগ আছে। এ বছর এসেছে স্মার্ট হাতঘড়ি, যা হাতে পরে ঘুমালে সারা রাত ধরে ঘুম পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম। এতে হৃৎস্পন্দন পর্যবেক্ষণের সঙ্গে অক্সিজেন সেনসর ও মোশন সেনসর লাগানো আছে, যা রাতভর শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা ও অক্সিজেনের ওঠানামা রেকর্ড করে রাখবে।
সূত্র: পপসাই