যে কোন নতুন হেয়ারস্টাইল যেকোনো সময় যে কারো লুক বদলে দিতে পারে। এ জন্যই তো ফ্যাশনপ্রেমী থেকে শুরু করে সবার থাকে হেয়ার কটা আর স্টাইল নিয়ে বিশেষ সচেতনতা। সবার নজরও তাই থাকে নতুন হেয়ারস্টাইল ট্রেন্ডের দিকে।
একটা নতুন হেয়ারস্টাইল যে কাউকে যেকোনো সময় সতেজ করে তুলতে পারে। এ জন্যই ফ্যাশনপ্রেমী থেকে শুরু করে যেসব মানুষ ফ্যাশনের অ আ ক খ জানেন না, তাঁরাও কোনো বিশেষ উপলক্ষে বা নিজেকে নতুন করে সাজাতে চুল কেটে থাকেন। তাই মোটামুটি সবারই নজর থাকে নতুন হেয়ারস্টাইল ট্রেন্ডের দিকে।
২০২০ সালটি হেয়ারস্টাইলের জন্য খুব ভালো একটি বছর ছিল না। অতিমারির জন্য বন্ধ ছিল পারলার, স্যালন। ঘরে বসেই কেউ চুল বড় করেছেন আবার কেউ ইউটিউব দেখে নিজেই নিজের চুল কেটেছেন। নয়া স্বাভাবিকতায় সবকিছু নিয়েই নতুন করে ভাবছেন সবাই। এ সময়ে এসেছে বেশ কিছু নতুন হেয়ারস্টাইল ট্রেন্ড।
হেয়ারস্টাইলিস্টদের মতে, এ বছর সত্তর দশকের হেয়ারস্টাইলগুলো ফিরে আসবে। এর মধ্যে আছে ভারী লেয়ারের শ্যাগ, কারটেইন ব্যাংস, এমনকি মুলেটও।
দ্য মুলেট
মাইলির মুলেট, ছবি: মাইলির ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডল
রক ও মেটাল ব্যান্ডের জন্মলগ্ন সত্তর দশকে ডেভিড বাওয়ি, রব স্টুয়ারট, কিথ রিচারড, নিল পার্ট, পল ম্যাককারটনির মতো বিখ্যাত শিল্পীরা মুলেট হেয়ারকাটকে জনপ্রিয় করেন। এর আগে প্রাচীন ব্রিটেন আর আদি আমেরিকানদের পুরুষদের এই চুলের স্টাইলে দেখা যেত বলে জানা যায়। এ বছর আবার ফিরে এসেছে অদ্ভুত চুলের কাটটি। তবে ছেলেদের জন্য নয়, মেয়েদের দেখা যাচ্ছে মুলেটে। সামনে ছোট আর পেছনে লম্বা এই হেয়ারস্টাইলে চুল সাজিয়েছেন মাইলি সাইরাস, রিহানা, জেন্ডায়া, বারবি ফেরেইরার মতো সেলিব্রেটিরা। অফিস এবং পার্টি—উভয়ের জন্য চুলের এই স্টাইল উপযোগী। সামনের দিকে চুলের ছোট কাট দেবে অফিস লুক। আর পেছনের লম্বা চুল ছেড়ে দিয়ে যেকোনো সময় পার্টির জন্য প্রস্তুত হওয়া যাবে।
বব
বব মানায় সব ধরনের মুখের সঙ্গেই
হেয়ারস্টাইলে বব নতুন কিছু নয়। যাঁরা লম্বা চুল রেখে ক্লান্ত হয়ে গেছেন, তাঁরা যেকোনো ধরনের বব কাটে চুল সাজাতে পারেন। ক্ল্যাসিক ববের পাশাপাশি এখন বেশ দেখা যাচ্ছে অ্যাসিমেট্রিকাল বা অসমানুপাতিক বব কাট। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, কাটটি সব ধরনের মুখের সঙ্গেই সুন্দরভাবে মানিয়ে যেতে পারে। পেছনে ছোট, সামনে লম্বা বা একপাশে লম্বা অন্যপাশ ছোট, যেকোনোভাবেই অসমানুপাতিক বব কাট করা যায়। আর এমন চুল কাটার সাহস না পেলে ক্ল্যাসিক বব তো আছেই। এতে টুইস্ট আনতে সামনের দিকে ব্যাংস কাট করতে পারেন।
দ্য শ্যাগ
মেগ রায়ানের মতো চুল কাটতে পারেন, ছবি: মেগ রায়ানের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডল
ষাটের দশকের শেষের আর সত্তর দশকের গোড়ার দিকে এই হেয়ারকাটটি খুব বিখ্যাত হয়ে ওঠে। মাঝারি, লম্বা চুলেই বেশির ভাগ সময় শ্যাগ কাট করতে দেখা যায়। ছোট চুলের অধিকারীরা এই কাট দিতে চাইলে নব্বই দশকে বিখ্যাত হলিউড অভিনেত্রী মেগ রায়ানের মতো চুল কাটতে পারেন। শ্যাগ কাটের প্রধান বৈশিষ্ট্য অগোছালো লেয়ার। এই অগোছালো লেয়ারের মাধ্যমে চাইলেই চুলে ভলিউম সৃষ্টি করা যেতে পারে। এখন গোল, চৌকো, পানপাতা বা ডিম্বাকৃতি—সব আকারের মুখের জন্য মানানসই হেয়ারস্টাইল এটি।
কারটেইন ব্যাংস
নতুনত্ব আনতে বেছে নিতে পারেন কারটেইন ব্যাংস
সোজা লম্বা চুলে একটু নতুনত্ব আনতে বেছে নিতে পারেন কারটেইন ব্যাংস হেয়ারস্টাইল। এটিও সত্তর দশকের বেশ জনপ্রিয় হেয়ারকাট। তখন ফারাহ ফসেট, ব্রিজেট বারডটের মত সেলিব্রেটিরা একে বিখ্যাত করেন। আর এখন জেনিফার লোপেজ, হিলারি ডাফ, হ্যাল বেরি, বিলি আইলিশকে দেখা যাচ্ছে কারটেইন ব্যাংসে। সাধারণ ব্যাংসের চেয়ে লম্বা এই ব্যাংসে যেকোনো স্টাইলেই চুল সাজাতে পারবেন। আর এই কারটেইন ব্যাংস পারলারে না গিয়ে ইউটিউব দেখে ঘরে বসেই কাটতে পারেন। হ্যাঁ, এতটাই সহজ এই চুলের কাট।
কার্লি ব্যাংস
কোঁকড়া চুলে ব্যাংস কাট
একটা সময় বলা হতো কোঁকড়া চুলে ব্যাংস কাট মানায় না। সেই দিন এখন শেষ হতে চলেছে। অন্তত কার্লি ব্যাংস ট্রেন্ড সেই আভাস দিচ্ছে। যাঁদের কোঁকড়া চুল, তাঁরা যেকোনো ধরনের ব্যাংস কাট দিতে পারেন। তবে খুব ছোট ব্যাংসের চেয়ে একটু লম্বা ব্যাংসই কোঁকড়া চুলে ভালো মানায়।
হেয়ারকালার
চুল না কেটে লুকে স্টাইলিশ লুক আনা যাবে চুলে রং করে
চুল না কেটে লুকে স্টাইলিশ পরিবর্তন আনতে চাইলে চুল রং করার চেয়ে ভালো বিকল্প আর কিছু হতেই পারে না। অনেক রঙেই চুল রাঙাতে পারেন। প্রতিবছর হেয়ারকাটের মতো হেয়ারকালারেরও নতুন ট্রেন্ড আসে। এ বছর আলপাইন আইস, গোল্ডেন ব্ল্যাক, ব্লু, প্যাস্টেল শেড, মিন্ট চকলেট, কপার, ম্যাট ব্রাউন, বাটারক্রিম ব্লন্ড, আইস গ্রে, ল্যাভেন্ডার গ্রে, স্যান্ড ট্রোপেজ (ধূসর ও সোনালির মাঝামাঝি শেড) ইত্যাদি রঙের আধিপত্য বেশি থাকবে।