দুটি হাত মানেই সাজ আবার কাজও। আর দিনটি যদি হয় ঈদুল আজহা, তবে তো চিন্তার অবকাশ নেই। এই ঈদে যেহেতু পশু কোরবানির বিষয় থাকে, তাই মাংস কোটাবাছা, ধোয়া, রান্নাবান্না—কাজের সব ঝক্কি যেন যায় হাত দুটির ওপর দিয়ে। তাই আপনার কোমল হাত দুটির দিকে দিতে হবে একটু ভালোবাসার নজর।
হাতের যত্ন একটু কম হলেই কিছু সাধারণ সমস্যা বাড়ে। তার মধ্যে রয়েছে নখ ভাঙা, খসখসে চামড়া, হাতের রঙের তারতম্য ও মরা চামড়া ওঠা। আর ঈদের দিন বলে এতে যোগ হয় আরও কিছু বাড়তি সমস্যা। যেমন হাতে কাঁচা মাংস ও মসলার গন্ধ, ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ, রুক্ষতা বা হাত কেটে যাওয়া। তাই ঈদের দিনে কাজ শেষ করে সময় নষ্ট করা যাবে না। এ ছাড়া হাতের কিছু যত্ন ঈদের কিছুদিন আগে থেকেই শুরু করা উচিত বলছিলেন হার্বস আয়ুর্বেদিক স্কিন অ্যান্ড হেয়ার কেয়ার ক্লিনিকের রূপবিশেষজ্ঞ আফরিন মৌসুমি।
ঈদের আগে ও পরে মোট পাঁচটি ভাগে হাত ও নখের যত্ন জরুরি। এই যত্নগুলো হাতের সাধারণ সমস্যার পাশাপাশি মাংসের গন্ধ ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ কমাতেও দারুণ।
নখের যত্নে
নখ একটা ছোট অংশ হলে এর সৌন্দর্যের মাপকাঠি কিন্তু ঠিক রাখা জরুরি। নখের একটি পরিচিত সমস্যা হলো পাতলা হয়ে ভেঙে যাওয়া। অথবা মাংস কাটতে গিয়ে ধারালো বঁটি বা ছুড়িতে লেগে নখ কেটে বা ভেঙে যাওয়া। কিন্তু নখ যদি একটু মোটা হয়, তবে ভেঙে যাওয়ার ভয় থাকে না। ঈদের কিছুদিন আগে থেকেই এই যত্ন শুরু করা যায়। ২ টেবিল চামচ জলপাই তেলে একটা পুরো রসুন থেঁতো করে জ্বালিয়ে নিতে হবে। রসুন ব্যবহারের আগে ধুয়ে নেওয়া যাবে না। এবার বোতলে রেখে প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে নখে লাগালে নখ শক্ত ও মোটা হবে।
নখ ছোট করে কেটে রাখাই ভালো
মাংসের গন্ধ ও তেল কাটাতে
ঈদের দিনে মাংসের ও মসলার গন্ধ এবং তেল কাটাতে হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহারের বিকল্প নেই। কিন্তু এতে হাতের চামড়া ওঠা, চামড়া রুক্ষ ও খসখসে হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। তাই হ্যান্ড ওয়াশে সামান্য ভিনেগার ও চিনি মিশিয়ে নিলে একবার ব্যবহারেই গন্ধ ও তেল দ্রুত কেটে যাবে। এতে কাঁচা মাংসের ব্যাকটেরিয়াও হাত থেকে দূর হবে।
হাত ধুতে হবে ভালোমতো
উজ্জ্বলতা ও কোমলতা বাড়াতে
হাত যেহেতু সব থেকে বেশি ব্যবহার করা হয়, তাই এতে মরা চামড়াও তৈরি হয় সব থেকে বেশি। এর জন্য লাল চিনি। লেবু ও মধুর প্রাকৃতিক স্ক্র্যাব কার্যকরী। হাতের উজ্জ্বলতা ও কোমলতা বাড়াতে ২ টেবিল চামচ লাল চিনি, ১ টেবিল চামচ লেবু ও আধা টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে হাতে ম্যাসাজ করতে হবে যতক্ষণ না চিনি পুরোপুরি গলে যায়। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
চামড়া ওঠার সমস্যা কমাতে
চামড়া ওঠার সমস্যা কমাতে হাত ময়েশ্চার করা জরুরি। এর জন্য আধা কাপ টক দই, ২ টেবিল চামচ বেসন, গুঁড়া দুধ ১ টেবিল চামচ, গ্লিসারিন ১ টেবিল চামচ মিশিয়ে হাতে ব্যবহার করতে হবে।
হাত কোমল রাখতে
প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। এর জন্য আধা কাপ নারকেল তেল বা জলপাই তেল এক কাপ, ২ টেবিল চামচ গ্লিসারিন ও আধা কাপ গোলাপজল বোতলে করে রেখে দিতে হবে।
হাত কোমল রাখবে ময়েশ্চারাইজার, মডেল: সাইদা আহমেদ
সাধারণ পরামর্শ
১. ম্যানিকিউরের আগে নারকেল তেল বা পেট্রোলিয়াম জেলি দিয়ে নিতে হবে। এতে হাতে রুক্ষতা আসবে না।
২. মাংস কাটার আগে নখ কেটে ছোট করে নেওয়া ভালো।
৩. মাংস প্রস্তুত করতে গিয়ে হাত কেটে গেলে কীটনাশক দিয়ে সঙ্গেসঙ্গেই পরিষ্কার করে জায়গাটি ব্যান্ডেজ করে ফেলতে হবে।
* রিফাত পারভীন, ঢাকা