আধুনিক অনেক রকম পরিষ্কারকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাচীন বলা হয় সাবানকে। ইতিহাস বলে, প্রায় ২৮০০ বছর আগে থেকেই সাবানের ব্যবহার প্রচলিত ছিল। বিশেষ করে প্রাচীন মিসরীয়রা গোসলে পরিষ্কারক ব্যবহার করতে বেশ পছন্দ করত। যার জন্য সাবানের মতো একধরনের পরিষ্কারক তৈরি হতো। যাতে থাকত ক্ষারযুক্ত লবণ, পশু ও সবজির তেল। এ ছাড়া ত্বকের অনেক ধরনের সমস্যার সমাধান হিসেবে মিসরীয়রা এই বিশেষ সাবান ব্যবহার করত।
এভাবে বিভিন্ন রূপের পরিবর্তনে আধুনিক সাবান তৈরি হয়। তবে সাবান ব্যবহারের সবচেয়ে বড় বিড়ম্বনা হলো দ্রুত গলে যাওয়া। স্নানঘরে থাকা সাবানের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এতে তরল অনেক ধরনের উপাদানই থাকে বেশি। তাই আর্দ্রতা ও উষ্ণতা পেলেই সাবান গলতে শুরু করে। তাই হাতে তৈরি হোক বা বাজার থেকে কেনা—সব ধরনের সাবান দীর্ঘ সময় ব্যবহারের প্রথম শর্ত পানি থেকে দূরে রাখা। বলছিলেন হার্বস আয়ুর্বেদিক ক্লিনিকের আয়ুর্বেদিক রূপবিশেষজ্ঞ আফরিন মৌসুমী।
আয়ুর্বেদ ও রূপবিশেষজ্ঞ আফরিন মৌসুমী দীর্ঘদিন থেকে নিজেই সাবান তৈরি ও বিপণন করছেন। তিনি কিছু সহজ পরামর্শ দিয়েছেন, যা মানলে অল্পতেই গলবে না গোসলঘরের সাবান।
বিশেষ পরামর্শ
সাবান শক্ত রাখতে স্বাভাবিকভাবেই তা পানি থেকে দূরে রাখতে হবে। তবে গরম পানি একেবারেই সাবানের কাছে নেওয়া যাবে না। বেশি তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা—দুটিই সাবান দ্রুত গলিয়ে ফেলে। এর প্রধান কারণ সাবানে থাকা তেল। গরম পানির সংস্পর্শে জমাট বাঁধা তেল তরল হয়ে যায়।
সাবান যেন কম গলে, এর সহজ একটি উপায় হলো সাবানদানি ব্যবহার। এতে সাবান গলা অনেকটাই কমবে। এখন কিছু বিশেষ আকারের সাবানদানি পাওয়া যায়, যাতে পানি নিজে নিজেই ঝরে যায় আর সাবান থাকে অনেকটাই শুকনা। বাতাসে সাবান শুকানোর আরেকটি উপায় হলো গোসল ঘরের জানালার পাশে সাবান রেখে দিলে বাতাসে স্বাভাবিকের চেয়ে শক্ত হবে। তবে রোদে শুকানো যাবে না।
গোসলের সময় সাবানে হাত লাগিয়ে ব্যবহার না করে, প্রয়োজনমতো নরম পরিষ্কারক কাপড়ে লাগিয়ে ব্যবহার করতে হবে। এতে সাবান কম গলে। সাবান ছোট টুকরা করে কেটে ব্যবহার করলে একটি সাবান দীর্ঘ সময় ব্যবহার করা সম্ভব। এতে পুরো সাবানে পানি লাগবে না আর গলবেও না। সাবান না গলানোর আরেকটি পদ্ধতি হলো ব্যবহারের পর শুকনো লিনেনের কাপড়ে মুড়িয়ে রাখা। এতে সাবান শক্ত হয় ও গলে কম।
* রিফাত পারভীন, ঢাকা