What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

৫৪ ধারাঃ বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার এবং সেক্ষেত্রে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির করণীয় (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
2TgWVob.jpg


আমরা সামাজিক জীব। সমাজে চলতে ফিরতে যে শব্দগুলোর সাথে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ ঘটে এর মাঝে "আইনকানুন" শব্দটি খুবই কমন একটা শব্দ। সমাজে চলতে গেলে আমাদের প্রতিনিয়ত রাষ্ট্রের দ্বারা প্রণিত বিভিন্ন আইন মেনে চলতে হয়। আইন মেনে চলা প্রতিটি নাগরিকের অন্যতম কর্তব্য। সেই আইন ভঙ্গ করলে তার জন্য আছে বিভিন্ন শাস্তির ব্যবস্থা। রাষ্ট্রের পুলিশ বাহিনীর উপর আইন ভঙ্গকারীকে গ্রেফতার করে আদালতের হাতে সোপর্দ করার দায়িত্ব অর্পণ করা আছে। এখন কথা হচ্ছে পুলিশ কি যখন ইচ্ছা তখন কাউকে গ্রেফতার করে নিয়ে যেতে পারে? এর উত্তরটা একটু জটিল। সোজাসাপটা ভাষায় পারে না। সাধারণত কাউকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশকে গ্রেফতারি পরোয়ানা দেখাতে হবে। তবে পুলিশের হাতে বিশেষ ক্ষমতা দেয়াও আছে যখন কিনা বিনা গ্রেফতারি পরোয়ানায়ও পুলিশ সন্দেহভাজন কাউকে গ্রেফতার করতে পারে। ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ 'র ৫৪ ধারায় এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া আছে।

ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ কিংবা গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়া নিম্নবর্ণিত ব্যক্তিগণকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেঃ

১। এমন কোন ব্যক্তি যার বিরুদ্ধে কোন আমলযোগ্য গুরুতর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে অথবা যুক্তিসঙ্গত সন্দেহ রয়েছে।

২। সেইরুপ কোন ব্যক্তি যার কাছে ঘর ভাঙ্গার সরঞ্জাম রয়েছে এবং তিনি এর পক্ষে কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ দর্শাতে পারলেন না।

৩। ফৌজদারী কার্যবিধি অনুসারে কিংবা সরকারের আদেশ দ্বারা যাকে অপরাধী বলে ঘোষণা করা হয়েছে।

৪। এমন কোন ব্যক্তি যার নিকট চোরাই মালামাল আছে বলে পুলিশ সন্দেহ করে।

৫। পুলিশের কাজে বাধাদানকারী ব্যক্তি।

৬। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী থেকে পলায়নকারী সন্দেহে সন্দেহভাজন কেউ।

৭। বাংলাদেশের বাইরে কৃত এমন কোন কাজের সাথে জড়িত যা কিনা বাংলাদেশে অপরাধ বলে গণ্য হতো এমন কোন ব্যক্তি।

৮। কোন মুক্তিপ্রাপ্ত আসামী যে কিনা ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৬৫(৩) ধারার লঙ্ঘনকারী এবং

৯। যে ব্যক্তিকে গ্রেফতারের জন্য অপর কোন পুলিশ অফিসারের নিকট থেকে অনুরোধ পাওয়া গেছে ।

পুলিশের এই বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার নিয়ে জনমনে ভীতি আর দুঃশ্চিন্তা বিরাজ করে অনেকসময়।

Universal Declaration on Human Rights 'র ৯ অনুচ্ছেদে বলা আছে কোন ব্যক্তি বিধিবহির্ভূতভাবে গ্রেফতার এবং আটকের শিকার হবে না। আমাদের সংবিধানের ৩৩ নম্বর অনুচ্ছেদেও গ্রেফতার ও আটক সম্পর্কে রক্ষাকবচ দেয়া আছে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে গ্রেফতারের কারণ না জানিয়ে আটক রাখা যাবে না এবং তাকে তাহার মনোনীত আইনজীবির সাথে পরামর্শ করার সুযোগ দিতে হবে। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট হাজির করতে হবে।

কোন ব্যক্তি নিখোঁজ থাকলে করণীয়ঃ

কোন ব্যক্তি নিখোঁজ থাকলে পার্শ্ববর্তী থানায় প্রথমে খোঁজ করতে হবে। যদি কোন সংবাদ পাওয়া না যায় সেক্ষেত্রে উচ্চ আদালত অর্থাৎ হাইকোর্ট বিভাগে জরুরী ভিত্তিতে রীট করতে পারে। অবৈধ আটকাদেশের বিরুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকর আইনি পদক্ষেপ হচ্ছে "হেবিয়াস কর্পাস" রীট করা। হেবিয়াস কর্পাসের আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে "সশরীরে হাজির করা"। যখনই আদালতে নিখোঁজ কোন ব্যক্তি সম্পর্কে আবেদন করা হয় যাকে সর্বশেষ পুলিশের হেফাজতে দেখা গেছে তখন আদালত পুলিশকে আটকৃত ব্যক্তিকে সশরীরে হাজির করার জন্য সমন জারি করে। এমনকি আটকাদেশ যদি অবৈধ প্রমাণিত হয় তাহলে ভিকটিমকে ক্ষতিপূরণ প্রদানেরও নির্দেশ দিতে পারে উচ্চ আদালত।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির অবস্থান সম্পর্কে তার পরিবার কিভাবে জানতে পারবে?

একজন ব্যক্তিকে গ্রেফতারের পরপরই পুলিশকে অনেকগুলো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। পুলিশ গ্রেফতারের চালানপত্র তৈরি করে স্থানীয় ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট প্রেরণ করে। পুলিশকে অবশ্যই গ্রেফতারের পর গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির পছন্দ অনুযায়ী কোন আত্মীয়কে অবহিত করতে হবে। পুলিশ এই আইনগুলো না মানলে আদালতে জবাবদিহি করতে হবে।

গ্রেফতারের ক্ষেত্রে গ্রেফতারের শিকার ব্যক্তির করনীয়ঃ

১। কোন ব্যক্তিকে যদি কখনো কেউ গ্রেফতার করতে চায় তাহলে ওই ব্যক্তির প্রথম করনীয় হচ্ছে দ্বিতীয় ব্যক্তিটি আদৌ আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর কেউ কিনা সেই ব্যাপারে জানতে চাওয়া। এমনকি পুলিশের পোশাক পরিহিত থাকলেও পরিচয়পত্র দেখতে চাইতে পারে। ব্লাস্ট বনাম বাংলাদেশ মামলার মাধ্যমে আদালত থেকেও পুলিশকে পরিচয়পত্র প্রদর্শনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া আছে। গ্রেফতার করতে চাইলে পুলিশকে ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় যেতে হবে, সাদা পোশাকে নয়।

২। পুলিশ যদি কোন ব্যক্তিকে তার বাসস্থান ছাড়া অন্য কোন স্থান থেকে গ্রেফতার করে যখন কিনা ওই ব্যক্তির পরিচিত কেউ ওই স্থানে ছিল না তখন ওই ব্যক্তি ফোনে তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার সুযোগ চাইতে পারবে।

৩। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি অবিলম্বে তার পছন্দের আইনজীবীর সাথে দেখা করার সুযোগ চাইতে পারবে।

ফৌজদারি কার্যবিধির এই ৫৪ ধারা নিয়ে অনেকের মনেই নানা প্রশ্ন আছে। অনেকেই এই ধারা বহাল থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে এই ধারা অনেক কার্যকরী। এই ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে পুলিশ চাইলে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে অনেক নাশকতার পরিকল্পনা আগেই বানচাল করে দিয়ে দেশ এবং জনগণের জানমাল রক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এর অপব্যবহার করলে এই ধারার প্রকৃত যে উদ্দেশ্য তা ব্যাহত হবে। ব্যাপারটা অনেকটা ধারালো ছুরির মত যা কিনা ভালো কাজেও ব্যবহার করা যাবে আবার মন্দ কাজেও। এই ধারার অপব্যবহাররোধে উচ্চ আদালত ব্লাস্ট বনাম বাংলাদেশ মামলার মধ্য দিয়ে বেশ কিছু গাইডলাইন সুপারিশ করেছে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top