শীত পড়তেই খাদ্য রসিক বঙ্গবাসী অপেক্ষায় থাকে জয়নগরের মোয়া, নলেন গুড়ের মিষ্টি ও পায়েসের স্বাদ নিতে। দূষণের কারণে বঙ্গবাসীদের শীতের পরশ পেতে অপেক্ষা করতে হয়ে বছরের শেষ পর্যন্ত। শীতের হিমের পরশে নলেন গুড়ের স্বাদ বাঙালীর কাছে মধুর সমান। আমাদের দেশে তালের রস,আখের রস ও খেজুরের রস থেকে তৈরী হয় গুড়। বর্ষশেষে শীতের মজায় এই গুড় দিয়ে তৈরি মিষ্টি, পিঠে ,পায়েসে মজে থাকে বঙ্গবাসী। এমন কি আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরী করতে ব্যবহার করা হচ্ছে নলেন গুড়। গবেষকরা জানিয়েছেন গুড়ে উপকার অনেক। কি কি উপকার জানতে চান ? নিচে বিস্তারিত দেওয়া হল–
❏ খাবার পর প্রতিদিন যদি একটু করে গুড় খেলে খাবার হজম করতে সাহায্য করে। গুড় আমাদের হজমে সাহায্যকারী এনজাইমের শক্তিকে বাড়িয়ে দেয়।
❏ শরীরে আয়রণের অভাব অনেকের দেখা যায়। এর ফলে শরীরে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ায় নানারকম সমস্যার সৃষ্টি হয়। গুড়ে প্রচুর পরিমানে আয়রণ থাকে। প্রতিদিন অল্প পরিমানে গুড় খেলে আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় আয়রণের অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে।
❏ প্রিমেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম বা পিএমএস সমস্যা সাধারণত কমবেশি সমস্ত মহিলারা ভোগেন। প্রতিদিন গুড় খেলে শরীরে হরমোনের সমতা ফেরাতে সাহায্য করে। এছাড়া গুড় আমাদের শরীরে এন্ডোরফিন্স অর্থাৎ হ্যাপি হরমোনের বৃদ্ধি ঘটায়। ফলে গুড় পিএমএস এর হাত থেকে রক্ষা করে।
❏ কার্বোহাইডেড জাতীয় খাবার আমাদের শরীরে এনার্জি প্রদান করে। যেমন চিনি। কিন্তু অনেক সময় হঠাৎ করে তৈরী হওয়া এনার্জি আমাদে শরীরে রক্তে চিনির পরিমান বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু বেশি পরিমানে এই ভাবে দেহে চিনির পরিমান কমে যাওয়া ও বেড়ে যাওয়ার ফলে অনেক সময় আমাদের অন্যান্য অঙ্গ যেমন আমাদের কিডনি, চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এছাড়া আমাদের রক্তচাপ বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। গুড় খেলে এই সমস্যাটি হয়না। কারণ গুড়ের রক্তের সাথে মিশতে ও শরীরে এনার্জি তৈরীর প্রক্রিয়া টি কিছুটা ধীরে কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী হয়। ফলত রক্তে গ্লুকোজ হঠাৎ করে বেশি কমে বা বেড়ে যেতে পারেনা। ফলত আমাদের শরীরের অন্যান্য অঙ্গগুলির কোনো ক্ষতি হয়না।
❏ গুড় সাধারণত গরম হয়। তাই শীতকালে প্রতিদিন গুড় খেলে সর্দি কাশি থেকে আরাম দেয়। এছাড়া গুড় আমাদের শরীরকে গরম রাখে শীতকালে বা আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে ভাইরাল ফাইবারের সংক্রামণের থেকে আমাদের রক্ষা করে। এছাড়া এস্থেমা রুগীদের জন্যও গুড় অত্যন্ত উপকারী।