What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প কেন এত আকর্ষণীয়? (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,654
Messages
117,056
Credits
1,241,720
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
6FWINU5.png


উন্নত দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায় শিল্পই মূলত সেসব দেশের উন্নয়নের চাবিকাঠি। কিন্তু বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল একটি দেশে, যেখানে দেশের মূল চালিকা শক্তি কৃষি, সেখানে পোশাক শিল্প কিভাবে দেশকে বিশ্বের বড় বড় শক্তির কাতারে ফেলছে তা অত্যন্ত আশ্চর্যের বিষয়। কোন সন্দেহ নেই যে গত কয়েক দশকে বাংলাদেশ পোশাক শিল্পে একটি শক্তিশালী দেশ হয়ে উঠছে।

পোশাক শিল্পে বাংলাদেশের অবস্থান

প্রথমেই একটু পরিসংখ্যানের দিকে নজর দেই। চায়নার পরে বাংলাদেশই দ্বিতীয় বৃহত্তর তৈরি পোশাক রপ্তানীকারক (RGM) দেশ। দেশের ৮২% রপ্তানী এই তৈরি পোশাক শিল্প থেকেই যায়। বাংলাদেশের মোট জিডিপিতে এর অবদান ১২.৩৬%। দেশের অর্থনীতির একটি বড় শক্তি এই পোশাক শিল্প, যেখানে প্রায় ২০ মিলিয়ন মানুষ এই শিল্পের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত৷ আগামী ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হবার যে সংকল্প করেছে তাতে পোশাক শিল্পের অবদানই থাকবে সবচেয়ে বেশি।

২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ পোশাক শিল্পে এর রপ্তানী মূল্য প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলার ছুতে চায়। আপাতদৃষ্টিতে পোশাক শিল্পের অগ্রগতিতে তা খুব একটা অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে না। গত অর্থ বছরে অর্থাৎ ২০১৮ সালেই EPB (Export Promotion Bureau)- এর হিসেবে পোশাক শিল্পের উন্নতির জন্যই সামগ্রিক রপ্তানি ৫.৮১% বেড়ে ৩৬.৬৭ বিলিয়ন ডলারে ঠেকেছে। এখানে পোশাক শিল্পের রপ্তানি বেড়েছে ৮.৭৬% যা লক্ষ্যের চেয়েও ১.৫১% বেশি।

পোশাক শিল্প কেন এত আকর্ষণীয়?

সারা বিশ্বেই আমাদের দেশের তৈরি পোশাকের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। সে সাথে আমাদের পোশাক শিল্প খাত বিশ্বের কাছে বেশ আকর্ষণীয়। এর রয়েছে বেশ কিছু কারণ।

দ্রুত মুনাফা

এটিই সম্ভবত সবচেয়ে বড় কারণ। এত দ্রুত মুনাফা অন্য কোন শিল্পে পাওয়া যায় না যার কারণে বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীরা আমাদের পোশাক শিল্প খাতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এটি একমাত্র খাত যেখানে ৩ থেকে ৫ বছরেই পুঁজি ফেরত আসতে শুরু করে। তাছাড়া বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তর পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে এখানে প্রচুর সম্ভাবনাও রয়েছে যার ফলে সারাবিশ্ব আমাদের পোশাক শিল্প খাতে দিনদিন আগ্রহী হয়ে উঠছে। চায়না ধীরে ধীরে পোশাক খাতে পিছিয়ে পরার দরুণ সামনে বাংলাদেশের আরো বড় সাফল্যের সুযোগ রয়েছে।

সস্তা শ্রমিক মূল্য

ছোট এই দেশের জনসংখ্যা অনেক যা দেশের জন্য সম্ভাবনাময় মানব শক্তি হিসেবে কাজ করছে। অধিক সংখ্যক শ্রমিক এবং অত্যন্ত কম মূল্য- এই দুইটি দিকই অন্যান্য প্রতিযোগী দেশ থেকে বাংলাদেশকে এগিয়ে রেখেছে। বাংলাদেশে শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ভারত, চায়না, কম্বোডিয়া এবং ভিয়েতনামের ন্যূনতম বেতন থেকেও কম।

তার উপর প্রতি বছর প্রায় ৩৭টি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রচুর গ্রাজুয়েট বের হচ্ছেন যারা দক্ষ মানব শক্তি হিসেবে এই খাতকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আপনি জানেন কি ২০০৬সালেই বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে ৬ষ্ঠ হয়েছিল? অথচ তখন দেশের মোট রপ্তানির মাত্র ২.৮% ছিল পোশাক।

ডিউটি ফ্রি সুবিধা

বাংলাদেশ বহুদিন স্বল্পোন্নত দেশ এর কাতারে থাকায় এতদিন বিভিন্ন দেশে ডিউটি ফ্রি দোকানগুলো বা কম ট্যাক্সের দোকানগুলোতে বাংলাদেশী কাপড়ের অগ্রাধিকার ছিল। মোট ৫২টি দেশে বাংলাদেশের ডিউটি ফ্রি যাতায়াত রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ইউরোপের দেশগুলো, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, জাপান, টার্কি, রাশিয়া, নরওয়ে, নিউজিল্যান্ড, সাউথ কোরিয়া, চায়না, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্ডিয়া।

এছাড়াও বাংলাদেশ বিভিন্ন চুক্তি করেছিল যেমন SAARC Preferential Trading Arrangement, Asia-Pacific Trade Agreement, Bay of Bengal Initiative for Multi-Sectoral Technical and Economic Co-operation, South Asian Free Trade Area এবংOIC এর সদস্য দেশগুলোর জন্য Trade Preferential System যা আমাদের দেশের পোশাক খাতকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করেছে।

প্রযুক্তিগত উন্নয়ন

বাংলাদেশ পোশাক শিল্পে প্রযুক্তিগত নানা উন্নয়নের মাধ্যমে বিশ্বের তাবৎ বড় বড় রিটেইল ব্র‍্যান্ডকে আকৃষ্ট করেছে। পোশাক খাতে নানা প্রযুক্তির সাথে সাথে বিভিন্ন মানোন্নয়নের প্যারামিটার বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের সুনাম বয়ে এনেছে।এছাড়াও গুণগত মানের ক্ষেত্রে চায়নার চেয়ে কোন অংশেই বাংলাদেশ এখন আর পিছিয়ে নেই। বর্তমানে সবচেয়ে উন্নত ও আধুনিক যন্ত্রপাতি একদিকে যেমন বিশ্ববাজারে ক্রেতাদের বিশ্বাস অর্জন করছে অপর দিকে মানের ক্ষেত্রেও সবার মন জয় করছে।

উন্নয়নের বাধা

গত কয়েক বছরে রানা প্লাজার মত দূর্ঘটনাগুলো বাংলাদেশকে বিশ্বের সামনে একটি অত্যন্ত সেন্সিটিভ ইস্যু নিয়ে দাঁড় করিয়েছে- তা হলো শ্রমিকদের নিরাপত্তা আর মৌলিক অধিকার নিয়ে বাংলাদেশের মনোভাব। যদিও বাংলাদেশ শ্রমিকদের ন্যায্য মূল্য এবং সুস্থ কর্মক্ষেত্র দেবার পথে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু তবুও দেশের পোশাকশিল্পের শ্রমিকরা বিশ্বের সবচেয়ে কম পারিশ্রমিক পাওয়া শ্রমিকদের মধ্যে অন্যতম।

বিশ্ব ফ্যাশন খাত অত্যন্ত উন্নয়শীল এবং লাভজনক একটি খাত। কিন্তু তা সম্পূর্ণভাবে দাঁড়িয়ে আছে তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র সীমার নিচে থাকা শ্রমিকদের কাধে ভর করে। Public Radio International (PRI) এর একটি গবেষণায় দেখা যায় বাংলাদেশের গড় জাতীয় আয়ের মাত্র ৬৫% পোশাক শ্রমিকদের পারিশ্রমিক। যেখানে আমেরিকায় শ্রমিকদের মাসিক আয় প্রায় ১৮৬৪ ডলার, আমাদের দেশে তা প্রায় ১৯৭ ডলার। তাই শ্রমিকদের ন্যায্য পারিশ্রমিক এবং সুস্থ কর্মক্ষেত্র নিশ্চিত করা ছাড়া ভিশন ২০২১ এ পৌঁছানো যাবে না।

সামনে রয়েছে দীর্ঘ পথ

২০১৬-১৭ এর হতাশা জনক অর্থ বছরের পর ২০১৭-১৮ দেখিয়েছে অনেকটা আশার আলো। এই অবস্থানে দাঁড়িয়ে আগামী তিন অর্থ বছরে ভিশন ২০২১ অর্জন করা কিছুটা কষ্ট সাধ্য মনে হলেও অসম্ভব নয় মোটেও। দ্রুতবর্ধনশীল বাজার, সরকারের সুদৃষ্টি এবং বিশ্ব বাজারে দেশের পোশাক শিল্পের সুনাম আমাদের লক্ষ্য মাত্রায় পৌছাতে সাহায্য করবে অনেকটা। আমাদের শুধু মনে রাখতে হবে কোন উন্নয়নই এর শ্রমিকদের ছাড়া সম্ভব নয়। তাই উন্নয়নের এই যাত্রায় সাথে রাখতে হবে তাদেরও। পোশাক শ্রমিকদের সকল মোলিক অধিকারের ব্যবস্থা করে তাদের উন্নত জীবন যাপনের দিকে সরকারের সুদৃষ্টি দিতে হবে। পরিশেষে শুধু একমুখী উন্নয়ন নয়, সামগ্রিক উন্নয়নই দেশের পোশাক শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

তথ্যসূত্রঃ Wikipedia, Textile Today এবং Stich Diary
 

Users who are viewing this thread

Back
Top