What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review সিটকমঃ ব্যস্ততার স্বস্তি (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
OkAp5JS.jpg


শুরু করি সদ্য প্রেমে–ব্যর্থ এক তরুণীর গল্প দিয়ে। দীর্ঘদিনের স্মৃতি ঘাটলে একরাশ বেদনাই যেন তেড়েফুঁড়ে ওঠে। গোটা শহরেই যেন ছড়িয়ে আছে বিরহ। ক্রমান্বয়ে বিষণ্ণতা পেয়ে বসছিল তাকে, ভেঙে আসছিল প্রতিরোধের দেয়াল। কথায় আছে, সকল কিছুরই বিকল্প বর্তমান। তরুণীর জন্য সেই বেদনার বিকল্প হয়ে দাঁড়ালো শেষমেশ সিটকম। জোয়ির ব্যঙ্গাত্মক হিউমার, জিনার স্পষ্টভাষিতা আর সিম্পসন পরিবারের অবাক সব কান্ডই মুছে দিলো সব ব্যথাতুর অভিজ্ঞতা।

অবিশ্বাস্য লাগছে? তাহলে বাজি ধরে দেখে ফেলুন Friends, The office অথবা Perks and Recreation। সিরিজ শেষে আপনিও কিছুটা বদল দেখবেন নিজের ভেতর, কথার ভাঁজে সরসতাও বাড়বে বহুগুণে। আর পাহাড়সম ব্যস্ততার ফাঁকে পাবেন নিখাদ প্রশান্তি।

সিটকম মানে কী?

সিটকম (Sitcom) শব্দের পূর্ণরূপ হলো সিচুয়েশনাল কমেডি (Situational Comedy)। গৎবাঁধা ঠাট্টা, পরিচিত কৌতুকের বাইরে প্রতিদিনের ক্ষুদ্র মুহূর্তকে কেন্দ্র করে সরস উপস্থাপনই হলো এর লক্ষ্য। এ যেন অনেকটা, নিজেতে নিজে হাসা। এ ধারণার স্রষ্টা কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র, তাই মার্কিনীদের হাত ধরেই অধিকাংশ জনপ্রিয় সিরিজ এসেছে।

ইতিহাস ঘাঁটলে প্রথম সিটকম হিসেবে পাওয়া যায় ১৯৪৬ সালের ব্রিটিশ সিরিজ 'Pinwrights's Progress' এর নাম। তবে পঞ্চাশের দশকেই সিটকম শব্দটি গ্রহণযোগ্যতা পেতে থাকে। পরিচালক উইলিয়াম এশারকে ধরা হয় বিনোদনের নতুন এই ধারার জনক। I love Lucy, Our Miss Brooks সহ একরাশ সিটকমের উত্থান ঘটে তাঁর হাতে।

BuvZQgT.jpg


ক্লাসিক সিটকম 'I love Lucy'; Photo Source: Closer Weekly

বিনোদনে নতুন মোড়

সিটকমের সবচেয়ে শক্তিমান দিক হলো এর চরিত্র চিত্রায়ন ও গল্প বলার ভঙ্গিতে। এর চরিত্রগুলো হয় আমাদের চারপাশের মানুষদের মতো, তাই খুব দ্রুতই ঘনিষ্ঠ হতে পারে দর্শক। রসিকতার পাশাপাশি রূঢ় সত্য অবলীলায় বলে ফেলাটাও সিটকমের এক বৈশিষ্ট্য। প্রতি পর্বের পরিধিও খুব অল্প, গড়ে ২০–২৫ মিনিট। হালকা চালে বিনোদিত হওয়ার উদ্দেশ্যেই লোকে সিটকম দেখে। অধিকাংশ সিটকম বছরের পর বছর চলতে থাকায় দর্শকও যেন এর চরিত্রগুলোর সাথে বেড়ে উঠতে থাকে। সহজ ভাষায় কঠিন জীবনবোধ তুলে ধরবার জন্যও সুনাম আছে সিটকমের। জবরদস্তি হাসাবার চেষ্টা, স্থুল রসিকতার বদলে সূক্ষ্ম হিউমারের খোঁচাই থাকে এতে।

বিখ্যাত কিছু সিটকম

খ্যাতির পাল্লায় বহু সিটকমই বেশ ভারি। গুটিকয়ের নাম তুললে অবিচারই হয় অন্যদের ক্ষেত্রে। স্বল্প ধারণা দেবার খাতিরেই পাঁচ জনপ্রিয় সিটকমের সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরা হলো।

Frineds

সিটকম আর Friends –অনেকের কাছে সমার্থক। আর হবেই বা না কেন! ১৯৯৪–২০০৪ সাল অব্দি চলে আসা এই সিটকমের সাথে নিজেকে মেলাতে পারেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বেশ দুষ্করই। রস,র‍্যাচেল, জোয়ি, মনিকা, ফিবি আর চ্যান্ডলারের গল্প যেন প্রতিটি বন্ধু দলের কার্বন কপি। এনবিসি নেটওয়ার্কে প্রচারিত এই সিটকম সর্বাধিক বার দেখা সিরিজগুলোর মধ্যে অন্যতম। এবছরই এর ২৫ বছর পূর্ণ হলো। দশ সিজনের সিটকমটি নির্মাণ করেছেন ডেভিড ক্রেন ও মার্টা ক্রফম্যান।

আইএমডিবি যদিও এর রেটিং ৮.৯ বলছে, তবে এর ভক্তদের কাছে সেটা হয়তো অসীমের কাছাকাছিই। প্রচারের পর থেকে রাতারাতি তারকা বনে যান জেনিফার এনিস্টোন, কুর্টনি কক্স, লিসা কুড্রো, ম্যাথু পেরি, ম্যাট লেব্ল্যাঙ্ক ও ডেভিড শুইমার প্রত্যেকেই। এর মধ্যে জোয়ি চরিত্রটি এতই লোকপ্রিয়তা পায় যে নির্মাতারা সেই নামে আলাদা করে সিরিজ বানান। এর থিমসং 'I'll there for you' তো এখনও এর অনুরাগীদের কাছে সমান আদরের। Empire Magazine, Writer's Guide, TV Guide সহ বহু সংস্থার করা 'সর্বকালের সেরা টেলিভিশন অনুষ্ঠান'এর সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছে ফ্রেন্ডসের নাম। সর্বমোট ২৩৬ পর্বের প্রতিটির রানটাইম মাত্র ২০–২২ মিনিট। তাহলে দেখেই ফেলুন ছয় বন্ধুর মিষ্টি খুনসুটির এই সিটকম।

The Office

WzXxejP.jpg


স্টিভ ক্যারেলের মুনশিয়ানায় The Office পেয়েছে ভিন্ন মাত্রা; Photo Source: Medium

আজকালকার অফিস কিন্তু আর কাঠখোট্টা নয়। কাজের পাশাপাশি কর্মীরা যেন সুন্দর সময় কাটায় সেখানে, এটাই এখন অধিকাংশ অফিস কর্তার মূল লক্ষ্য। কে না জানে, সুখী কর্মী মানেই সফল প্রতিষ্ঠান।

এই ধারণাকেই পুঁজি করে প্রতি সকালে অফিসে আসেন 'ডান্ডার মিফলিন পেপার কোম্পানি'র স্ক্র্যান্টন শাখার ম্যানেজার মাইকেল স্কট। দাঁড়ান দাঁড়ান। কী ভাবছেন? দারুণ উজ্জীবিত আর সৃজনশীল কোন অফিসকে দেখবেন? আশায় গুঁড়ে বালি। আগেই বলে দিই উদ্ভট , কিম্ভূতকিমাকার এক কাগজ কোম্পানির ছোট্ট একটা শাখার গল্প এটা। প্রথম সিজন দেখেই উল্টো আপনি ভাববেন, 'এ আবার কী অফিস রে বাবা!'

মাইকেল, জিম, প্যাম, ডোয়াইট, ডেরিল, ক্রিড, মেরেডিথ, এরিন, এঞ্জেলা, অস্কার, কেভিন, অ্যান্ডি, টোবি, ফিলিস, কেলি, রায়ান, স্ট্যানলি– এদের নিয়েই ক্ষুদ্র এই অফিসের প্রতিদিনের কড়চা। একদিকে যেমন মাইকেলের মজাদার কর্মকাণ্ড দেখে হেসে গড়িয়ে পড়বেন, অন্যদিকে আবার ডোয়াইটের সর্বদা 'হেডমাস্টারি' দেখে কপাল কুঁচকে উঠবে আপনার। আর জিম–প্যামের অনবদ্য প্রেমের রসায়ন হয়তো নতুন করে ভালোবাসতে শেখাবে।

২০০৫ সালের মার্চে এনবিসি নেটওয়ার্কে যাত্রা শুরু করে এই সিরিজ। তবে এর যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংস্করণই এর গোড়াপত্তন করে। মাত্র দুই সিজনে মোট ১২ পর্বেই দর্শক মাত করে রিকি জারভিসের The Office-UK। পুরস্কারের কাতারেও এটি ছিল শীর্ষে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র সংস্করণে মোট ২০১ পর্ব দেখার সুযোগ পায় দর্শক। ডকুমেন্টরির কাঠামোয় নির্মিত এই সিটকমের জনরাকে বলা হয় 'মকুমেন্টরি' (Mockumentary). রসাত্মক ও উপভোগ্য এই সিরিজের পেছনের মূল কারিগর ছিলেন রিকি জারভিস, স্টিফেন মার্চেন্ট ও ক্রেইগ ড্যানিয়েলস। স্টিভ ক্যারেল, জেনা ফিশার, জন ক্রাসিনস্কি, রেইন উইলসন, এঞ্জেলা কিনসে, মিন্ডি কেলিংসহ বহু গুণী অভিনেতাই আছেন এতে। জিম আর প্যাম জুটি এতই জনপ্রিয়তা পায় যে, ভক্তরা এদের বাস্তব জীবনেও জুটি ভাবতে শুরু করে।

২০১৩ সালের ১৬ মে এর ফাইনাল পর্বটি বিশ্বব্যাপী ৫.৬৯ মিলিয়ন দর্শক একসাথে উপভোগ করে।

Brooklyn Nine-Nine

9Wn8oK5.jpg


নাইন-নাইন দলের উন্মাদনায় হেসে উঠবেন আপনিও; Photo Source: Amazon

পুলিশ শব্দটার সাথে আমাদের পরিচয়টা বোধয় খুব সুখকর নয়। পুলিশ মানেই আমাদের কাছে কঠিন আইনের মারপ্যাঁচ অথবা ঘুষের ছড়াছড়ি। তবে ব্রুকলিনের জেক পেরাল্টাকে একনজর দেখলে আপনার সেই ধারণা আমুল বদলে যাবে নিশ্চিত।

বলছি হালজমানার জনপ্রিয় সিটকম 'Brooklyn Nine-Nine' এর কথা। আমেরিকার ছোট্ট উপশহর ব্রুকলিন। এর পুলিশ শাখার দৈনন্দিন জীবনযাপনের সাথে খুনসুটি আর হাস্যরস মিশিয়েই এই সিটকমের প্রতিটি এপিসোড। জেকের চৌকস বুদ্ধিমত্তা, ক্যাপ্টেন হল্টের স্নেহ, এমির বোকামো কিংবা জিনার বিদ্রূপাত্মক কৌতুক– সবটাই স্ক্রিনে আপনাকে টেনে রাখতে বাধ্য।

২০১৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ফক্স টেলিভিশনে পথচলা আরম্ভব হয় এটির। এখন অব্দি ৬ সিজনে মোট ১৩০ পর্ব প্রচারিত হয়েছে। সঙ্গত কারণেই প্রথম পাঁচ সিজনের পর এনবিসি কিনে নেয় এর স্বত্ব। মাইকেল ও ড্যান গোরের তত্ত্বাবধানে নির্মিত এই সিটকমের রানটাইম ২১–২২ মিনিট। এন্ডি স্যামবার্গ, স্তেফানি বিয়াট্রিজ, মেলিসা ফুমেরো, চেলসি পেরেটি, টেরি ক্রিউস,জো লো ট্রুগলিও, আন্দ্রে ব্রোগর প্রমুখ আছেন এর মূল অভিনেতার তালিকায়। আইএমডিবি রেটিং ৮.৪ ই অনেকখানি এর আবেদন জানান দেয়। সেরা সিরিজ হিসেবে যেমন গোল্ডেন গ্লোব, এমি এ্যাওয়ার্ডস পেয়েছে এটি, তেমনি সেরা অভিনেতা হিসেবে এন্ডি স্যামবার্গও বেশ কবার বাগিয়ে নিয়েছেন সেরা পুরস্কারগুলো।

The Big Bang Theory

a3V3oXf.jpg


সম্প্রতি সমাপ্ত হলো জননন্দিত এই সিটকম; Photo Source: Medium

মাত্র পাঁচ মাস আগেই শেষ হলো তুমুল জনপ্রিয় আমেরিকান সিটকম 'দ্য বিগ ব্যাং থিওরি'। নাম শুনেই আন্দাজ করতে পারছেন বিজ্ঞানের সাথে সম্পৃক্ততা আছে এর। একদম ঠিক। ক্যালটেক ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির দুই পদার্থবিদ শেলডন কুপার ও লিওনার্দো হফস্টেডরকে নিয়েই গভীর হিউমারের এই সিটকম। ২০০৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৬ মে পর্যন্ত মোট ১২ সিজনের ২৭৯ টি পর্ব প্রচারিত হয়েছে এর। ১৮–২২ মিনিট সময়ের প্রতিটি পর্বেই রসিকতার সাথে বিজ্ঞানের অদ্ভুত মেলবন্ধন পাবেন দর্শক। যাদের কাছে পদার্থবিজ্ঞান একেবারেই রসকষহীন মনে হয়, তারা অল্প কটা এপিসোড দেখেই নিতে পারেন।

বিল প্র্যাডি আর চাক লরির প্রযোজনায় এই সিটকমকে একেবারে হালকা করে দেখবার উপায় নেই, কারণ ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিদ ও পদার্থবিদ ডেভিড সল্টজবার্গ, নিউরো সায়েন্টিস্ট মায়িম বিয়ালিক সহ বহু বিজ্ঞানী ও অধ্যাপকের মতামত নিয়েই তৈরি হয়েছে এটি। ৮.৪ আইএমডিবি রেটিং পাওয়া 'দ্য বিগ ব্যাং থিওরি'র ঝুলিতে পুরস্কারের সংখ্যাও কম নয়। শেলডন রূপে জিম পারসন তো এমি অ্যাওয়ার্ডসের পরিচিত মুখ। এছাড়াও এর নিয়মিত কুশিলবে ছিলেন জনি গ্যালেকি,কেলি কুকো, সিমন হেলবার্গ, কুনাল নায়ারসহ অনেকেই।

How I Met Your Mother

HDcD1Re.jpg


তুখোড় গল্পের বৈচিত্র্যময় উপস্থাপনাই HIMYM এর মূলশক্তি; Photo Source: IMDB

'ছোটবেলায় আমরা তখন পাঁচ মাইল হেঁটে ইস্কুলে যেতাম।' এমন ধারাতেই আমাদের বাবা মা নিজেদের গল্পগুলো শুরু করেন। ২০৩০ সালে নিউইয়র্কের টেড মসবিও এমনতরো সুরেই তার সন্তানকে বলেন তার আর ট্রেসির গল্প। এর সাথে যুক্ত হয় ম্যানহাটনের একরাশ বন্ধুত্বের গল্প। ২০০৫ সালের পটভূমিতে বলা ,চমৎকার রোমান্স, কমেডি আর হিউমারে ঠাসা এই সিটকম প্রথম প্রচারিত হয় ২০০৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর, সিবিএস নেটওয়ার্কে। কার্টার বেইস ও ক্রেইগ থমাসের উদ্যোগে প্রথম থেকেই এটি নজর কাড়ে দর্শকদের। যদিও শেষদিকের কয়েক সিজনে দর্শক মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখায়। জশ র‍্যাডনর, নীল প্যাট্রিক হ্যারিস,জেসন সেগেল, ক্রিস্টেন মিলিয়টি, কোবি স্মুল্ডারস অভিনীত এই সিটকমের সিজন সংখ্যা নয়। ২২ মিনিট রানটাইমের হাস্যরসাত্মক এই সিরিজের সর্বমোট পর্ব ২০৮। আইএমডিবিতে ৮.৩ পাওয়া এই সিরিজটি এমিতেও দশখানা এ্যাওয়ার্ড জিতে নিয়েছিল। ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ সমাপ্তি ঘটে এর।

বিনোদনের মূল লক্ষ্যই ব্যক্তিকে আনন্দিত করা, মাথায় বুনট ঠাসা নয়। সেই দায়িত্বটা খুব ভালোমতেই কাঁধে চেপে চলেছে সিটকম ধারা। Modern family, The Simpsons, Fresh Prince of Bel Air, Glee, Seinfield,Two and a half man ইত্যাদি শো'র আকাশচুম্বী অনুরাগি সংখ্যাই বলে দেয় এর আবেদন।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top