What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other উপমহাদেশের সর্বপ্রথম চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং এর ধারাবাহকিতায় বাংলাদেশী নির্মাতাদের অবস্থান (1 Viewer)

Welcome! You have been invited by Arehman2017 to join our community. Please click here to register.

Starling

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 7, 2018
Threads
775
Messages
12,015
Credits
220,609
Recipe wine
Kaaba
Profile Music
Birthday Cake
3pO2I3o.jpg


ভারতীয় উপমহাদেশের সর্বপ্রথম চলচ্চিত্র নির্মাতা বাংলাদেশী – তথ্যটি বর্তমান সময়ের অনেকেরই অজানা। ভারতীয় চলচ্চিত্রের জনক হীরালাল সেন ছিলেন বাংলাদেশের মানিকগঞ্জের বগজুরি গ্রামের বিখ্যাত জমিদার গোকুলকৃষ্ণ সেন এর দৌহিত্র। হীরালাল সেন তার ভাই মতিলাল সেনকে নিয়ে গড়ে তোলেছিলেন 'রয়েল বায়োস্কোপ কোম্পানি'। ১৯০১ সালের ১৩ই ডিসেম্বর ডালহৌসী ইনষ্টিটিউট এ সেকালের প্রধান বিচারপতি স্যার ফ্রান্সিস ম্যাকমিলানের উপস্থিতিতে হীরালাল সেন তার চলচ্চিত্র 'ভ্রমর', 'আলীবাবা', 'হরিরাজ', 'দোল লীলা' ইত্যাদি প্রদর্শন করেন। এগুলো ছিল মুলত সেকালের বিখ্যাত নটশ্রেষ্ঠ অমরনাথ দত্তের ক্লাসিক থিয়েটারের বিভিন্ন নাট্য-দৃশ্যের চিত্রায়ন। ভারতীয়রা আজ দাদাভাই ফালকে-কে ভারতীয় সিনেমার জনক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য অপপ্রয়াস চালাচ্ছেন। ডিজি ফালকে নির্মিত চলচ্চিত্র 'সত্যবাদী রাজা হরিশচন্দ্র' মুক্তি পায় ৩ মে, ১৯১৩ সালে। ততোদিনে হীরালাল সেন নির্মান করে ফেলেছেন কাহিনীচিত্র, সংবাদচিত্র, তথ্যচিত্র ও বিজ্ঞাপন মিলিয়ে ৪০টি সিনেমা! বাংলাদেশী বাঙ্গালী বলেই হীরালাল সেন উপেক্ষিত হয়েছেন ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে। প্রক্ষান্তরে তার ১৩ বছর পর সিনেমা বানিয়ে ডিজি ফালকে পেয়েছেন ভারতীয় উপমহাদেশের সিনেমার জনকের খেতাব!

বাংলাদেশে কখনই মেধার কমতি ছিলনা। বাংলা চলচ্চিত্র বিকশিত হয়েছিল আব্দুল জব্বার খান, এহতেশাম, মুস্তাফিজ, খান আতাউর রহমান, জহির রায়হান, সালাহউদ্দিন, কাজী জহির, সুভাষ দত্ত, চাষী নজরুল ইসলাম, আমজাদ হোসেন, নারায়ন ঘোষ মিতা, দীলিপ বিশ্বাস সহ আরও অনেক (এই মুহুর্তে নাম মনে পড়ছেনা) নিবেদিতপ্রাণ বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী পরিচালকদের হাত ধরে।

আমাদের বাংলাদেশের সিনেমার মুল শক্তি ছিল হৃদয়ছোঁয়ে যাওয়া কাহিনী ও গান। অবিস্মরণীয় সেইসব গানের মুল কারিগর ছিলেন আব্দুল লতিফ, আলতাফ মাহমুদ, খান আতাউর রহমান, সমর দাস, সুবল দাস, দেবু ভট্টাচার্য্য, সত্যসাহা, কলিম শরাফী, আজাদ রহমান, কমল দাসগুপ্ত, রবিন ঘোষ, আলাউদ্দিন আলী, শেখ সাদী খান, আনোয়ার পারভেজ সহ আরো অনেক গুণী সংগীত পরিচালক। যাদের যোদ্ধা ছিলেন আব্দুল আলীম, ফেরদৌসী রহমান, নীনা হামিদ, লায়লা আর্জুমান্দ বানু, মাহমুদুন্নবী চৌধুরী, বশীর আহমেদ, আব্দুল জব্বার, রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমিন, শাহনাজ রহমতউল্লাহ, খন্দকার ফারুক আহমেদ, খুরশীদ আলম, শাম্মী আক্তার, সুবীর নন্দী, এন্ড্রু কিশোর সহ অনেক সংগীত শিল্পী।

বাংলাদেশের সিনেমার স্বর্ণযোগ রচিত হয়েছিল উপরোল্লেখিত মানুষসহ আরো অনেক নাম না জানা মানুষের নিরলস পরিশ্রম, অধ্যবসায় ও মেধার সংযোগে। আজ আমরা সেই স্বর্ণযোগ হারিয়েছি কিছু কুলাঙ্গারের কারনে। ইদানিং কিছু নব্য কুলাঙ্গারের উদ্ভব হয়েছে যারা আমাদের দেশের সিনেমা হলে ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শনের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। বিভিন্ন অনৈতিক উপায়ে তারা প্রদর্শনের সব প্রক্রিয়া প্রায় শেষ করে ফেলেছেন। হয়তো আগামী ঈদেই তা দেখা যাবে।

মাঝে মাঝে খুব কষ্ট হয় যখন ভাবি সেইযুগে আমাদের হীরালাল সেন যদি সবাইকে টেক্কা দিতে পারেন তবে আমরা কেন পারছিনা। কিন্তু আজ আমরা ভারতীয়দের কাছে পরাজিত। জনৈক অনুজের ভাষায় আমিও বলতে বাধ্য হচ্ছি ১৯৫২ সালে আমাদের পূর্বসুরীরা উর্দুকে ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন কিন্তু আজ ২০১৩ সালে আমরা হিন্দিকে ঠেকাতে পারলামনা। আগামী প্রজন্মের কাছে কি জবাব দেব ? তখন মাথা নিচু করে বলতে হবে প্রবল দেশপ্রেম আর প্রকৃত শিক্ষার অভাবে সেদিন আমরা ব্যর্থ হয়েছিলাম।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top