What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

কোন আগুন কীভাবে নেভাবেন (1 Viewer)

uGbTPlm.jpg


প্রতিবছর শুকনা মৌসুমে প্রায়ই আগুন লাগার খবর শোনা যায়। এবারও সেই ধারা আছে। নানা কিছু থেকে হঠাৎ করে দগ্ধ হচ্ছেন অনেকে। পুড়ে অগ্নিদগ্ধ হওয়া, মারা যাওয়া ছাড়াও ক্ষতি হচ্ছে ঘরবাড়ি, দোকানপাটের।

হঠাৎ ঘটে যাওয়া আকস্মিক অঘটনের কারণে যত ঠান্ডা মাথার ব্যক্তিই হোন না কেন, হয়ে যান কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ফলে সামান্য ভুলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। আগুন লাগার পর প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা থাকলে ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা হলেও কমিয়ে আনা যায়।

রান্না করতে গিয়ে, অসাবধানতায়, ইলেকট্রিক শর্টসার্কিট থেকে, দাহ্য পদার্থ থেকে যখন–তখন ছোট্ট আগুনের ফুলকির মাধ্যমে বড় আগুনে রূপান্তরিত হতে পারে। তাই কোন ধরনের আগুন লাগলে কীভাবে নেভানো যায়, সেটি জানা জরুরি। সেই সঙ্গে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেলে কীভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা করা যায়, সব বয়সীদের জন্য সেটি জানা থাকা ভালো।

বগুড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল হামিদ জানান, আগুন মূলত যে মাধ্যমগুলো থেকে লাগতে পারে, সেগুলো হলো কঠিন ও তরল পদার্থের আগুন, গ্যাস থেকে লাগা আগুন, ধাতব পদার্থ থেকে ও বিদ্যুৎ থেকে লাগা আগুন। যে মাধ্যম থেকে আগুনের বিস্তার, সেটি চিহ্নিত করে সেই মাধ্যমের আগুন নেভানোর প্রক্রিয়া শুরু করলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব।'

কোন আগুন কীভাবে নেভাবেন

কঠিন পদার্থ থেকে যেমন বাঁশ, কাঠ কিংবা এমন কিছু থেকে আগুন লাগলে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। আর তেল, মবিল, পেট্রল বা অন্যান্য তরল পদার্থ থেকে আগুনের সূত্রপাত হলে সাবানের ফেনা বা ফোম ছড়িয়ে, ভেজা কম্বল, বস্তা, কাঁথা বা ভারী কাপড় ছড়িয়ে দিয়েও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করতে হবে। পানি দিয়ে এই ধরনের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না, বরং পানি দিলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। যদি কোনো কিছুই পাওয়া না যায়, তবে শুকনা বালু ছিটিয়েও তরল পদার্থ থেকে সৃষ্ট আগুন বশে আনা যায়।

যেকোনো ধরনের গ্যাস থেকে ছড়িয়ে পড়া আগুনের ক্ষেত্রে গ্যাসের সরবরাহ লাইন বন্ধ করে দিতে বা রাইজারের নব ঘুরিয়ে দিতে হবে। গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুন লাগলে ভেজা কাঁথা, কম্বল, বস্তা বা ভারী কাপড় সিলিন্ডারের গায়ে জড়িয়ে চাপ দিয়ে বা নব ঘুরিয়ে কিংবা পানির জোর ঝাপটা দিয়ে গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ করে দিতে হবে। সব সময় খেয়াল রাখতে হবে, যদি গ্যাস লিক করছে বোঝা যায়, তাহলে কোনোভাবেই সেই স্থানের কাছাকাছি দেশলাই, সিগারেট, জ্বলন্ত মোমবাতি, কুপি ধরনের কোনো কিছু জ্বালানো অবস্থায় নিয়ে যাওয়া যাবে না।

ধাতব পদার্থের আগুন বা সোডিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি থেকে উৎপত্তি হয় এমন আগুন সব থেকে তীব্র হয়। সরাসরি পানির প্রয়োগে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। তাই অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের সাহায্যে এমন আগুনে সরাসরি স্প্রে করলে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।

বৈদ্যুতিক মাধ্যম থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটলে কোনোভাবেই পানি দেওয়া যাবে না। কারণ, পানি বিদ্যুৎ সুপরিবাহী হওয়ায় সহজেই যে কেউ বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যেতে পারেন। তাই প্রথমেই চেষ্টা করতে হবে বৈদ্যুতিক লাইনের মেইন সুইচ বন্ধ করার। তবে মেইন সুইচে আগুন লেগে গেলে যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। যাতে করে লাইনের বিদ্যুৎ সরবরাহ দ্রুততার সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায়। লাইন বন্ধ হয়ে গেলে নিরাপদ দূরত্বে থেকে পানি ছড়িয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি ফায়ার এক্সটিংগুইশার বা অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের সাহায্যে কার্বন ডাই-অক্সাইড ছড়িয়ে দেওয়া যায়। এতে আগুন সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।

প্রাথমিক চিকিৎসা

আগুন লেগে কেউ যদি পুড়ে যায়, তাহলে কী হবে? হাসপাতালে যাওয়ার আগে প্রাথামিক চিকিৎসাসেবায় করণীয় কী? ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান লিমন কুমার ধর বলেন, 'আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের আগুন নিভিয়ে ফেলেই সাধারণ কলের বা ঝরনার পানি ছেড়ে রেখে অন্তত ১৫ মিনিট ধরে চলমান পানির ধারা ক্ষতস্থানে লাগাতে হবে। বালতি বা গামলার আবদ্ধ পানি নয়, যেকোনো ধরনের পোড়া বা ঝলসানোর জন্য চলমান পানির ধারা সবচেয়ে কার্যকর। ক্ষতস্থানে একেবারেই হাত দেওয়া বা ঘষাঘষি করা যাবে না। তারপর পরিষ্কার সাদা সুতি কাপড়ে আলতো করে ঢেকে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।'

চিকিৎসক দেখার আগে পোড়া জায়গায় মলম, টুথপেস্ট, ডিম, আলুসহ যেকোনো উপাদান দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। নয়তো কতটা অংশ কেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেটি বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে। এ ছাড়া ক্ষতস্থানে লাগানো উপাদান তুলে দেখতে হলে রোগীর কষ্ট বেড়ে যাবে। তাই পানি দিয়ে ধুয়ে পাতলা কাপড় জড়িয়ে যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতালে বা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া দরকার।

সতর্কতা

  • বাসা বা অফিস—যেখানেই হোক না কেন, প্রথমেই বিদ্যুতের মূল সুইচ ও গ্যাসের সংযোগ বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে নিকটস্থ ফায়ার সার্ভিস অফিসে খবর পৌঁছাতে হবে।
  • যেখানেই আগুন লাগুক, ভুলেও লিফট ব্যবহার করে বের হওয়ার চেষ্টা করা যাবে না।
  • আগুনের ধর্ম ওপরের দিকে ওঠা। তাই বহুতল ভবনের নিচের দিকের যেকোনো অংশে আগুন লাগলে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় সতর্ক থাকতে হবে। তেমন হলে বিল্ডিংয়ের খোলা ছাদে চলে যাওয়াই ভালো। তাতে করে ঝুঁকি কম থাকবে এবং উদ্ধার পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
  • আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে নিজে নিরাপদ স্থানে চলে যান এবং অন্যদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে সাহায্য করুন।
  • যদি আগুন গায়ে বা পোশাকে লেগেই যায়, দৌড়াদৌড়ি করবেন না; তাতে আগুন বেড়ে যাবে। শুয়ে পড়ুন ও গড়াগড়ি দিতে থাকুন যতক্ষণ না আগুন নিভে যায়। সম্ভব হলে আক্রান্ত ব্যক্তির গায়ে ভেজা কাঁথা বা কম্বল দিয়ে জড়িয়ে ধরুন।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top