ওপেন কিচেন বা খোলামেলা রান্নাঘর। শখের বশে এখন অনেকেই করতে চাইছেন। তার আগে চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন ইন্টেরিয়র ডিজাইনারের পরামর্শে।
একটা সময় ছিল যখন বাড়ির রান্নাঘর কোন দিকে হবে, রান্নাঘরের কোন দিকে কী থাকবে, সেটা বাস্তু মেনে নির্ধারণ করতেন বাড়ির বাসিন্দারা। এখন সময় বদলেছে। এখন আর ওভাবে অনেকে ভাবেন না তা ঠিক, কিন্তু একটা বাড়ির খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশের নাম রান্নাঘর।
গ্রামাঞ্চলে এখনো রান্নাঘর পুরোপুরি আলাদা করারই চল আর শহুরে জীবনে ফ্ল্যাটের একপাশে ছোট্ট একচিলতে রান্নাঘরই সই। আবার সেই গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে এখন কেউ কেউ ঝুঁকছেন ওপেন কিচেনের দিকে।
ওপেন কিচেনের ধারণাটা মূলত পশ্চিমা দেশগুলো থেকেই এসেছে। রান্নাঘর খোলামেলা করতে চাইলে বেশ কিছু বিষয়ের ওপর দৃষ্টি রাখতে হবে।
সেই বিষয়গুলোই মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন ডিজাইন কোড ইন্টেরিয়রের ইন্টেরিয়র ডিজাইনার অ্যান্ড চিফ কনসালট্যান্ট আবদুল্লাহ আল মিরাজ। তাঁর মতে, 'আমাদের দেশে ওপেন কিচেনের ধারণাটা নতুন। আগে খুব কম বাড়িতে এমন রান্নাঘর করা হতো। এখন ধীরে ধীরে সংখ্যাটা বাড়ছে।'
এ ধরনের রান্নাঘর করার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখার পরামর্শ আবদুল্লাহ আল মিরাজের, ওপেন কিচেন করতে চাইলে প্রথমেই দেখতে হবে বাসায় যথেষ্ট জায়গা আছে কি না। বড় জায়গা থাকলে ছড়ানো–ছিটানো জিনিসগুলো সেন্ট্রালাইজ করাটা ভালো হয়। সাধারণত বড় বাসায় আলাদা স্টোররুম থাকে। সেখানে এই কিচেনের জরুরি আনুষঙ্গিক জিনিসগুলো রাখা হয়। জায়গা যথেষ্ট বড় না হলে ওপেন কিচেন না করাই ভালো।
ডাইনিং স্পেসের সঙ্গে লাগোয়া থাকে ওপেন কিচেন। ওপেন কিচেন মূলত আমরা নানান ছবিতে দেখি। কিন্তু বাস্তবে সেটা করতে গেলে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। সেটা আর ছবির মতো সুন্দর হয় না। তাই ওপেন কিচেন করার পরিকল্পনা করলে যখন দেয়ালগুলো উঠছে, তখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে হবে।
কারণ এই কিচেনের গ্যাস বার্নারটা গতানুগতিকের থেকে আলাদা হয়, পানির লাইনটা আলাদা হয় বা ময়লা পানি যাওয়ার লাইনটা বদলায়। তাই পরিকল্পনা করতে হবে একেবারে শুরুতেই।
ওপেন কিচেনের ক্ষেত্রে মূল অসুবিধাটা হয় তাপমাত্রা। বাসা বড় না হলে তাই ওপেন কিচেন না করারই পরামর্শ আবদুল্লাহ আল মিরাজের। ছোট বাসায় চুলা জ্বালালেই ঘর গরম হয়ে পড়ে। বড় বাসায় ভেন্টিলেশন ভালো থাকে। ফলে আবহাওয়াটা বোঝা যায় না।
এই সমস্যার আরেকটি সমাধান হলো বাসায় সেন্ট্রাল এসি লাগানো। বেডরুম ছাড়িয়ে ড্রয়িং–ডাইনিংয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করা মানে পুরা বাসা করা। তা না হলে শখের বশে করা ওপেন কিচেন পরে ভুল সিদ্ধান্তই মনে হবে।
ওপেন কিচেন করতে গেলে একটু নজর দিতে হবে লাইটিংয়ের ওপরও। এই গৃহসজ্জা বিশেষজ্ঞ বলেন, ফ্ল্যাটের রান্নাঘর আর কেবিনেটের ডিজাইনে আলাদা লাইট দরকার হয় না। ওপেন কিচেনে কেবিনেট কম রাখা হয়। সিলিং থেকে লাইটিংয়ের ওপরই নির্ভর করতে হয়। কেবিনেটের ভেতরে কিছু অন্ধকার অংশ থাকে, সেখানে লাইটিং দেওয়া যায়। আর কাজের জায়গাগুলোয় কিছু হিডেন লাইটিং দেওয়া যেতে পারে।
ওপেন কিচেনের আরেকটি অসুবিধা হলো মসলাদার কোনো কিছু রান্না করার ক্ষেত্রে ঝাঁজটা ছড়িয়ে পড়ে। সেটা অবশ্য অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যায় কিচেন হুড দিয়ে। আর খেয়াল রাখতে হবে বাড়ির জানালা দরজার অবস্থান। যেন একদিক দিয়ে হাওয়া ঢুকলে অন্যদিক দিয়ে সেটা বের হয়ে যায়। তাহলে আবহাওয়া গরম হবে না।
বসার ঘর আর খাওয়ার ঘরের সঙ্গে লাগোয়া রান্নাঘর হলে ওই সব ঘরের মতোই ওপেন কিচেনের ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে। আবদুল্লাহ আল মিরাজ বলেন, 'আমরা যেভাবে ড্রয়িংরুম মেনটেইন করতে পারি, রান্নাঘর সেভাবে পারি না। দেখা যায় তৈরির দু–তিন মাস পরে কিচেনটার ৫০ শতাংশও থাকে না।
তবে বাসাতে ওপেন কিচেনের সঙ্গে একটা স্টোররুম রাখতেই হবে। সেখানে দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিস অনেক কিছুই রাখতে পারা যাবে। তা না হলে ওপেন কিচেনের সৌন্দর্য শুরুতে যেমনটা থাকবে সেটা ধরে রাখা যাবে না।'
রান্না দেখতে দেখতে বা রান্না করতে করতে খাওয়ার ধারা অনেকেরই পছন্দ। কিন্তু সেটা করতে হলে বাড়তি যত্ন লাগবেই। তা না হলে জলে যাবে সব প্রচেষ্টা।
একটা সময় ছিল যখন বাড়ির রান্নাঘর কোন দিকে হবে, রান্নাঘরের কোন দিকে কী থাকবে, সেটা বাস্তু মেনে নির্ধারণ করতেন বাড়ির বাসিন্দারা। এখন সময় বদলেছে। এখন আর ওভাবে অনেকে ভাবেন না তা ঠিক, কিন্তু একটা বাড়ির খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশের নাম রান্নাঘর।
গ্রামাঞ্চলে এখনো রান্নাঘর পুরোপুরি আলাদা করারই চল আর শহুরে জীবনে ফ্ল্যাটের একপাশে ছোট্ট একচিলতে রান্নাঘরই সই। আবার সেই গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে এখন কেউ কেউ ঝুঁকছেন ওপেন কিচেনের দিকে।
ওপেন কিচেনের ধারণাটা মূলত পশ্চিমা দেশগুলো থেকেই এসেছে। রান্নাঘর খোলামেলা করতে চাইলে বেশ কিছু বিষয়ের ওপর দৃষ্টি রাখতে হবে।
সেই বিষয়গুলোই মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন ডিজাইন কোড ইন্টেরিয়রের ইন্টেরিয়র ডিজাইনার অ্যান্ড চিফ কনসালট্যান্ট আবদুল্লাহ আল মিরাজ। তাঁর মতে, 'আমাদের দেশে ওপেন কিচেনের ধারণাটা নতুন। আগে খুব কম বাড়িতে এমন রান্নাঘর করা হতো। এখন ধীরে ধীরে সংখ্যাটা বাড়ছে।'
এ ধরনের রান্নাঘর করার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখার পরামর্শ আবদুল্লাহ আল মিরাজের, ওপেন কিচেন করতে চাইলে প্রথমেই দেখতে হবে বাসায় যথেষ্ট জায়গা আছে কি না। বড় জায়গা থাকলে ছড়ানো–ছিটানো জিনিসগুলো সেন্ট্রালাইজ করাটা ভালো হয়। সাধারণত বড় বাসায় আলাদা স্টোররুম থাকে। সেখানে এই কিচেনের জরুরি আনুষঙ্গিক জিনিসগুলো রাখা হয়। জায়গা যথেষ্ট বড় না হলে ওপেন কিচেন না করাই ভালো।
ডাইনিং স্পেসের সঙ্গে লাগোয়া থাকে ওপেন কিচেন। ওপেন কিচেন মূলত আমরা নানান ছবিতে দেখি। কিন্তু বাস্তবে সেটা করতে গেলে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। সেটা আর ছবির মতো সুন্দর হয় না। তাই ওপেন কিচেন করার পরিকল্পনা করলে যখন দেয়ালগুলো উঠছে, তখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে হবে।
কারণ এই কিচেনের গ্যাস বার্নারটা গতানুগতিকের থেকে আলাদা হয়, পানির লাইনটা আলাদা হয় বা ময়লা পানি যাওয়ার লাইনটা বদলায়। তাই পরিকল্পনা করতে হবে একেবারে শুরুতেই।
ওপেন কিচেনের ক্ষেত্রে মূল অসুবিধাটা হয় তাপমাত্রা। বাসা বড় না হলে তাই ওপেন কিচেন না করারই পরামর্শ আবদুল্লাহ আল মিরাজের। ছোট বাসায় চুলা জ্বালালেই ঘর গরম হয়ে পড়ে। বড় বাসায় ভেন্টিলেশন ভালো থাকে। ফলে আবহাওয়াটা বোঝা যায় না।
এই সমস্যার আরেকটি সমাধান হলো বাসায় সেন্ট্রাল এসি লাগানো। বেডরুম ছাড়িয়ে ড্রয়িং–ডাইনিংয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করা মানে পুরা বাসা করা। তা না হলে শখের বশে করা ওপেন কিচেন পরে ভুল সিদ্ধান্তই মনে হবে।
ওপেন কিচেন করতে গেলে একটু নজর দিতে হবে লাইটিংয়ের ওপরও। এই গৃহসজ্জা বিশেষজ্ঞ বলেন, ফ্ল্যাটের রান্নাঘর আর কেবিনেটের ডিজাইনে আলাদা লাইট দরকার হয় না। ওপেন কিচেনে কেবিনেট কম রাখা হয়। সিলিং থেকে লাইটিংয়ের ওপরই নির্ভর করতে হয়। কেবিনেটের ভেতরে কিছু অন্ধকার অংশ থাকে, সেখানে লাইটিং দেওয়া যায়। আর কাজের জায়গাগুলোয় কিছু হিডেন লাইটিং দেওয়া যেতে পারে।
ওপেন কিচেনের আরেকটি অসুবিধা হলো মসলাদার কোনো কিছু রান্না করার ক্ষেত্রে ঝাঁজটা ছড়িয়ে পড়ে। সেটা অবশ্য অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যায় কিচেন হুড দিয়ে। আর খেয়াল রাখতে হবে বাড়ির জানালা দরজার অবস্থান। যেন একদিক দিয়ে হাওয়া ঢুকলে অন্যদিক দিয়ে সেটা বের হয়ে যায়। তাহলে আবহাওয়া গরম হবে না।
বসার ঘর আর খাওয়ার ঘরের সঙ্গে লাগোয়া রান্নাঘর হলে ওই সব ঘরের মতোই ওপেন কিচেনের ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে। আবদুল্লাহ আল মিরাজ বলেন, 'আমরা যেভাবে ড্রয়িংরুম মেনটেইন করতে পারি, রান্নাঘর সেভাবে পারি না। দেখা যায় তৈরির দু–তিন মাস পরে কিচেনটার ৫০ শতাংশও থাকে না।
তবে বাসাতে ওপেন কিচেনের সঙ্গে একটা স্টোররুম রাখতেই হবে। সেখানে দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিস অনেক কিছুই রাখতে পারা যাবে। তা না হলে ওপেন কিচেনের সৌন্দর্য শুরুতে যেমনটা থাকবে সেটা ধরে রাখা যাবে না।'
রান্না দেখতে দেখতে বা রান্না করতে করতে খাওয়ার ধারা অনেকেরই পছন্দ। কিন্তু সেটা করতে হলে বাড়তি যত্ন লাগবেই। তা না হলে জলে যাবে সব প্রচেষ্টা।