What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

কালু (1 Viewer)

puppyboy

Exclusive Writer
Story Writer
Joined
Mar 10, 2021
Threads
9
Messages
232
Credits
10,161
কালু , কি বলবো ওকে নিয়ে ? কিভাবে ওর পরিচয় দেবো ? ঠিক বুঝতে পারছি না । সিনেমায় গল্পে দেখছি বা পড়েছি । কিছু কিছু লোক থাকে এরা তাদের আশেপাশের লোকজন কে এতটাই প্রভাবিত করে যে চলে যাবার পর ও সেই লোক গুলির ছাপ থেকে যায় । কালু সেরকম ই একজন । এখনো কালুর ছাপ রয়েগেছে আমাদের ঘরে । অনেক গুলি বছর কেটে গেছে তারপর ও কালু যেন জিবন্ত আমাদের বাড়িতে । যেমন হুট করে এসে আমাদের বাড়ির অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছিলো ঠিক তেমনি সবাই কে অবাক করে দিয়ে উধাও হয়ে যায় ।


কালু কে কেউ নিয়ে আসেনি আমাদের বাড়ি ও একাই এসেছিলো । তেমনি ওকে কেউ বের করে দেয়নি ও একাই চলে গিয়েছিলো । ও আমাদের বাড়ি ছিলো প্রায় বছর তিন এর মতো । ধীরে ধীরে ও আমাদের জিবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠে ছিলো । বিশেষ করে আমার, নাহ কারো বিশেষ করে নয় । ও আমাদের সবার জীবন এর অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছিলো। বাবার জন্য তার আকাঙ্ক্ষিত ছেলে যা আমি কোনদিন হয়ে উঠতে পারিনি । মায়ের জন্য যে কি ছিলো সেটা আমি বলে বোঝাতে পারবো না কারন সেটা আমার কাছেও একটা ধাঁধা । কালু যেদিন চলে গেলো সেদিন আমার বাবা সবচেয়ে বেশি দুঃখ পেয়েছিলো । যেদিন কালু কে আর খুজে পাওয়া গেলো না সেইদিন বাবা যে বারান্দায় ইজি চেয়ারে বসলেন আর ওনাকে সুস্থ ভাবে চলা ফেরা করতে দেখেনি । আমার ও খুব খারাপ লেগেছে কিন্তু সবচেয়ে অবাক হয়েছি মা কে দেখে । উনি এমন একটা ভাব করতেন যেন কিছুই হয়েনি । মায়ের আচরন দেখে মনে হয়েছে কালু নামে কেউ কোনদিন ছিলইনা আমাদের বাড়ি ।


প্রথমে আমাদের পরিবার এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস এবং কালু আসার আগে আমাদের বাড়ির পরিস্থিতির একটা ছোট্ট বিবরন দিয়ে নেই । আজমত পুর গ্রামের সবচেয়ে সম্ভ্রান্ত পরিবার আমাদের পরিবার । এমন কি এই আজমতপুর নামটাও এসেছে আমাদের পরিবার থেকে । আমার দাদাজান এর বাবার মানে আমার বড় বাবার নাম ছিলো আজমত শেখ । বিশাল নাম ডাক ওয়ালা লোক ছিলেন উনি । শুনেছি একাই নাকি দশ লোকের খাবার খেতে পারতেন আজমত শেখ । তেমন পয়সা করি ছিলো না ওনার । উনি ছিলেন দাঙ্গাবাজ লোক ডাকাত মাড়া ওনার পেশা এবং সখ ছিলো । এই গ্রাম আর আশেপাশের গামের জমিদার ওনাকে খুব পছন্দ এবং সমিহ করতো । দেখা গেলো যে আজমত শেখ এর ভয়ে এই গ্রাম আর আসেপাসে গ্রামের ডাকাত আশা বন্ধ হয়ে গেলো । তাই জমিদার খুশি হয় ওনাকে কিছু জমি দিয়েছিলো । নিজের দেওয়ান এর মেয়ের সাথে বিয়ে ও দিয়েছিলো । যদিও আমার বাবা বলতো যে জমিদার হিন্দু না হলে নিজের মেয়ের সাথেই বিয়ে দিত । কিন্তু আমার কাছে সেটা অতিরঞ্জিত মনে হয়। তবে আজমত শেখ এর জমি জমায় মন বসতো না , উনি দাঙ্গা হাঙ্গামা করেই দিন কাটাতে পছন্দ করতেন । দেওয়ান এর মেয়ে মানে আমার বড় মা কে ছারাও আজমত শেখ আরও দুটি বিয়ে করেছিলো। তৃতীয় স্ত্রীর ঘরে কোন সন্তান হয় নি । দুই স্ত্রী মিলিয়ে আজমত শেখ এর মোট ছয় পুত্র এবং চার কন্যা । প্রথম স্ত্রীর ঘরে সুধু একটি পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহন করে । উনি হচ্ছেন আমার দাদাজান রহিম শেখ ।

যাই হোক জমিদারের দেয়া জমি নিয়ে আজমত শেখ এর কোন উৎসাহ না থাকলেও আমার দাদাজান আজমত শেখ এর বড় সন্তান নিজের বুদ্ধি আর বিচক্ষণতা দিয়ে নিজের ভাগে পাওয়া জমি কয়েকগুন বাড়িয়ে বেশ ফুলে ফেঁপে উঠেছিলো । জমিদারি প্রথা উঠে গেলে জমিদার চলে যায় বর্ডার এর ওই পাড় । কিন্তু আমার দাদাজান আজমত শেখ এর ছেলে এই এলাকার পদবী ছাড়া জমিদার হয়ে ওঠে । কিন্তু সমস্যা হয় আমার দাদাজান এর অন্য সৎ ভাই দের নিয়ে । মানে আজমত শেখ এর অন্য ছেলেদের নিয়ে । ওরা জমিজমা পেয়েও তেমন কিছু করতে পারেনি । তাই শেষ পর্যন্ত আমার দাদাজান এর পেছনে লাগে । কিন্তু পেরে ওঠেনা আমার দাদাজান রহিম শেখ এর সাথে । মার খেয়ে গর্তে লুকায় ।

এর পরের প্রজন্ম হচ্ছে আমার বাবা রুহুল শেখ । দাদাজন এর এক মাত্র জীবিত সন্তান । দাদাজান আর দাদিজান এর মোট সন্তান হয়েছিলো ১৩ টি , কেউ কেউ জন্মের পর পর আর বাকিরা ১০ বছর পেরুনর আগেই মাড়া যায় । সবাই বলতো এটা আমার দাদাজান এর সৎ মায়ের কোন জাদু মন্ত্রের ফল । আমি অবশ্য জানি না কথাটা কতটা সত্য । আমার আব্বা রুহুল শেখ হচ্ছেন আমার দাদাজান এর সর্ব কনিষ্ঠ সন্তান । দাদাজন যখন দেখছিলেন একে একে তার সব সন্তান মাড়া যাচ্ছে তখন তিনি কদম তলীর বিখ্যাত পীর বাবার কাছে যান । সবাই বলা বলি করে সেই পীর বাবাই নাকি আমার আব্বা কে মন্ত্র থেকে রক্ষা করেছেন । আজ ও সেই পীর জীবিত এবং আমাদের বাড়ি আসে কেউ জানে না সেই পীর এর বয়স কত। আমার আব্বা ও নাকি ওই পীর কে এই রকম ই দেখছে ।


আমার আব্বা দাদাজান এর বেশি বয়স এর সন্তান হওয়ার কারনে দাদাজান যখন মাড়া যান উনি বেশ কম বয়সী ছিলেন । তাই কম বয়সে পিতার ছায়া না পেয়ে আব্বা দাদাজান এর সৎ ভাইদের সাথে পেরে ওঠেনা । অনেক জমিজিরাত হারাতে হয় আমার আব্বা কে । কিন্তু তারপর ও যা ছিলো তাতে আমাদের ভেসে যেত । কিন্তু যে জিনিসটা আমার আব্বা কে সবচেয়ে বেশি দুঃখ দিত সেটা হচ্ছে মান সম্মান । আমার দাদাজান এর সৎ ভাইদের ছেলেরা সংখ্যায় অনেক । ওরা আমার আব্বার জমিজিরাত হাতিয়ে নিয়ে গ্রামে বেশ পয়সাকরি ওয়ালা লোক হয়ে যায় । যেখানে গ্রামের মাথা সবসময় আমার দাদাজান ছিলো । আর ওনার পর আমার আব্বার হওয়ার কথা সেখানে এখন আমার আব্বার সৎ চাচাতো ভাইরা হুকুম চালাতে লাগলো । এই নিয়ে আমার আব্বা খুব মন খারাপ করতে দেখতাম । আমার আব্বার সৎ চাচাতো ভাই রা সুধু আব্বার জমি আর সম্মান কেড়ে নিয়ে খান্ত হয়নি মাঝে মাঝে আব্বা কে অপমান ও করতো । আব্বা একা বলে ওদের সাথে পেরে উঠত না । তাই

আমার আব্বার ইচ্ছে ছিলো অনেক গুলো ছেলের । কিন্তু আমি জন্মাবার পর আমার বাবা মায়ের আর কোন সন্তান হয়নি । আর আমি তেমন স্বাস্থ্যবান ছেলে ছিলাম না । সবসময় সর্দি জ্বর লেগেই থাকতো । তাই আমার বাবা আরও বেশি মুষড়ে পড়েছিলেন । ওনার বদ্ধমুল ধারণা ছিলো । আমাদের বংশের হারানো ঐতিহ্য আমরা আর ফিরে পাবো না । সবাই মিলে আব্বা কে দ্বিতীয় বিয়ের বুদ্ধি দিলেও আব্বা করেন নি । কারন আব্বা যাকে সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করেন সেই কদম তলীর পীর বাবা বলেছেন আব্বার হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনবে যে ছেলে সেই ছেলে জন্মাবে আমার মায়ের ই পেট থেকে ।

আর সেই অপেক্ষায় ই আব্বা দিন গুন্তে লাগলেন । আমাকে আব্বা তেমন পছন্দ করতেন না কারন আমি শারীরিক ভাবে আর মানসিক ভাবে দুর্বল ছিলাম ( এখনো আছি ) কিন্তু কোনদিন খারাপ আচরন ও করেননি ।


বিশাল বাড়ি আমাদের থাকি সুধু গোটা কয়েক লোক । আমি আব্বা মা আর দুইজন কাজের লোক । আমাদের জমি আর আমরা নিজেরা চাষ করাই না । বর্গা দিয় দেয়া হয় । একজন ম্যানেজার আছে সেই যা ফসল আসে বিক্রি টিক্রি করে টাকা পয়সা বাবার হাতে দেয় । বাবা সারাদিন বাড়িতে থাকে কোথাও তেমন একটা যায় না । আমার দাদাজান যেমন সারাদিন এদিক সেদিক বিচার সালিস আর কাজ নিয়ে ব্যেস্ত থাকতো আমার বাবা তার উল্টো । বিচার সালিস তেমন আসেনা তার কাছে । সারাদিন বসে বসে সময় কাটায় ।

আর আমি আমার ইতিহাস সম্পূর্ণ ভিন্ন । দুর্বল স্বাস্থ্য আর শরীর নিয়ে আমি স্কুলে হাসির পাত্র । প্রায় অন্য ছেলেদের কাছে সারিরক অথবা মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে হয় আমাকে । শেখ বাড়ির ছেলে বলে বারতি খাতির আমি পাই না । আর সেই যোগ্যতা ও আমার নেই । বন্ধুবান্ধব এর ও বড় অভাব আমার । সবচেয়ে বেশি বিরক্ত করে আমার বাবার সৎ চাচাতো ভাই এর ছেলেরা ।


এই ছিলো আমাদের ঐতিহ্যবাহী ক্ষয়িষ্ণু পরিবার এর ইতিহাস ।


এখন আমি কালুর আগমন এবং পরিবর্তন এর কথা গুলি বলবো ।


তখন আমার বয়স হবে ১২-১৩ তাই সবকিছুই আমার মনে আছে । সেদিন ছিলো শুক্র বার । হঠাত আমি মায়ের চিৎকার শুনে ধরমর করে উঠে বসলাম ঘুম থেকে । আমার মাথা কাজ করছিলো না । আর এদিকে মা চিৎকার করেই যাচ্ছে । একটু ধাতস্ত হতেই আমি বিছানা থেকে নেমে ঘরের বাইরে এলাম । আমাদের দালান টা ছিলো ইংরেজি এল অক্ষর এর মতো । সামনে টানা বারান্দা । আমি দোতলায় থাকি । বারান্দায় এসে দেখি মা উঠানে দাড়িয়ে আছে আর একটা কালো মিশমিশে ছেলে মায়ের পা ধরে টানছে । আমাদের কাজের লোক দুটি রহিমা আর সেলিম দুজন ই ছুটে এসেছে কিন্তু ওরাও হতভম্বের মতো দাড়িয়ে আছে । মনে হয় বুঝতে পারছে না কি করবে ।

এদিকে আমিও বুঝতে পারছি না কি করবো । ছেলেটা যদি ভয়ঙ্কর হয় তাহলে ? এই চিন্তা কাজ করছিলো আমার মাথায় । কত ভিতু ছিলাম আমি । এদিকে আব্বা কেও কোথাও দেখা যাচ্ছে না । কি করবো কিছু ভেবে পাচ্ছিলাম না । এদিকে ছেলেটিও কিছুতেই মায়ের পা ছাড়ছে না । মা মনেহয় গোসল করে বেরিয়েছিলো । হাতে ভেজা কাপড় । মাথায় ভেজা চুল গামছা দিয়ে প্যাঁচানো । সেই অবস্থায় চেঁচিয়ে যাচ্ছে । আমার তখন কি কড়া উচিত ছিলো আমি যানতাম কন্তু আমার সাহস ছিলো না কিছু করার ।

এমন সময় আব্বা ঢুকলেন বাড়ির গেট দিয়ে সাথে আমাদের ম্যানেজার দিলিপ কাকু । তবে উঠানের অবস্থা দেখে ওনারাও কয়ক মুহূর্তের জন্য স্থম্বিত হয়ে গিয়েছিলেন । তবে প্রথম হুঁশ ফিরে পায় দিলিপ কাকু । দৌরে এসে কালো ছেলেটিকে ধরে টেনে সরানোর চেষ্টা করে । কিন্তু ছেলেটিকে বেশ শক্তিশালী মনেহয় । কিছুতেই দিলিপ কাকু পেরে উঠছিল না । দিলিপ কাকু যত জোরে টানছিল ছেলেটি ততো জোরে আমার মায়ের পা চেপে ধরছিলো । দিলিপ কাকু কে দেখে আমাদের চাকর সেলিম ও দৌরে এসে ছেলেটিকে ধরে মায়ের কাছ থেকে দূরে সরানোর চেষ্টা শুরু করে দিলো । আর রহিমা এসে মা কে জড়িয়ে ধরে রেখেছিলো যেন এই টানাটানিতে মা পড়ে না যায় ।

আমি উপর থেকে দেখছিলাম অবাক হয়ে আর মনে মনে শিহরিত হচ্ছিলাম ছেলেটির শক্তি দেখে । যেমন ভয় হচ্ছিলো মায়ের জন্য আবার তেমন হিংসা ও হচ্ছিলো ছেলেটির শক্তি দেখে । এমন সময় আমার আব্বা মনেহয় সম্বিৎ ফিরে পেয়েছিলেন । গর্জে উঠে ছেলেটি আর মায়ের দিকে এগিয়ে গেলেন । আব্বা কে আসতে দেখে দিলিপ কাকু আর সেলিম দূরে সড়ে গেলো । ঠাশ করে একটা শব্দ হলো যেন গুলি চলেছে কোথাও । আমার বুকটা কেঁপে উঠেছিলো সেই শব্দে । চোখের নিমেষে সব হয়ে গেলো যেন । চড় খেয়ে ছেলেটি মা কে ছেড়ে দিয়েছে । আর হঠাত করে ছাড়া পেয়ে মা আর রহিমা দুজনেই পড়ে গেছে উঠানে । আব্বা রাগে কাঁপছে আর বড় বড় নিশ্বাস নিচ্ছেলেন । সবচেয়ে অবাক কড়া কাণ্ড হলো এতো জোরে চড় খেয়েও ছেলেটি হাসছিলো । কালো কুচকুচে মুখে হলদে দাঁত গুলুও সাদা মনে হচ্ছিলো খুব ।

একটু নিরাপদ মনে করে আমি নিচে নেমে আসতেই মা আমাকে জড়িয়ে ধরে বারান্দায় বসে পড়লেন । খুব কাপছিলো মায়ের সাড়া শরীর । অনেক ভয় পেয়েছিলো মা । আমিও কম ভয় পাইনি সেদিন । আমার স্পষ্ট মনে আছে ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে গিয়েছিলো ।

ওদিকে মা চলে আসার পর ই দিলিপ কাকু আর সেলিম মিলে ছেলেটি কে ধরে ফেলেছে । আর আব্বা ছেলেটির গালে আর আক্তি চড় বসিয়ে রাগে কাঁপতে কাঁপতে জিজ্ঞাস করছিলেন কথা থেকে এসেছে আর কেন এমন করেছে । কিন্তু ছেলেটি কোন উত্তর দিচ্ছে না খালি হাসে । আর সেই হাসি ও এমন বিদঘুটে ছিলো যে আমার গা ছমছম করে উঠেছিলো ।
এ পর্যায়ে দিলিপ কাকু বলল যে "একে মেরে লাভ নেই পুলিসে খবর দিন হুজুর।" পুলিশ এলো আর এক প্রস্থ মার খেলো ছেলেটি । আর আমিও একটু সাহস পেয়ে একটু কাছ থেকে দেখে নিয়েছিলাম । কেমন থেবড়ানো নাক নাকের মাঝখানটা দেখে মনে হয় কেউ কেটে ফেলেছে । আর ঠোঁটের দুপাশ ফেটে সাদা হয়ে আছে । কিন্তু শরীরটা দেখে হিংসে হয়েছিলো বড়। খুব বেশি বয়স না আমার চেয়ে ৩-৪ বছরের বড় হবে তখন । কিন্তু কি পেটানো শরীর । দিলিপ কাকু আর সেলিম দুজনে মিলেও পারেনি কেন পারেনি তা ওর শরীর দেখে বুঝতে পেরেছিলাম ।

পুলিশ এর মার খেয়েও হাসছিলো ছেলেটি । কোন কথার উত্তর দিচ্ছিলো না । আর পুলিশ এর মার কি রকম সেটা ওদিন খুব কাছ থেকে দেখছিলাম । ওরা সাধারন মানুষ এর মতো ধুম ধাম মারে না ওদের মাইর গুলা চিকন মার । কেউ চুলের জুলফি ধরে টেনে দিচ্ছে অথবা হাঁটুর ঠিক জোড়ায় একটা মাঝারি বাড়ি দিচ্ছে । কিন্তু কোন টেকনিক ই ছেলেটির মুখ থেকে শব্দ বের করতে পারেনি ।

একেবারে শেষে কথা বলেছিলো অবশ্য যখন দুজন পুলিশ ওর কোমরে দড়ি বেধে নিয়ে যাচ্ছিলো তখন । আমার মায়ের দিকে আঙুল তুলে বলেছিলো মা ।

আর ওই একটা শব্দই ওকে এই বাড়িতে স্থায়ী জায়গা করে দিয়েছিলো । মায়ের অনেক বলার পর বাবাই ওকে ছাড়িয়ে এনেছিলো থানা থেকে । ওই সময় পর্যন্ত আমার জিবনের সবচেয়ে উত্তেজনাকর ঘটনা ছিলো ওই শুক্রবার সকাল এর ঘটনা। তাই অতি কৌতূহল থেকে যখনি ওই পাগলা ছেলে নিয়ে কথা হতো তখনি আমি কান পেতে শুনার চেষ্টা করতাম । তাই আব্বা আর মায়ের কথোপকথন গুলি আমি প্রায় সবগুলি শুনেছি । যেদিন আব্বা অবশেষে ওই ছেলেকে ছাড়িয়ে আনার জন্য রাজি হলেন সেদিন এর কথা গুলিও আমি শুনছিলাম ।

মা ঃ শুনছেন , আমার কিছু ভালো লাগে না সারাদিন ওই ছেলের মুখটা মনে পড়ে , কেমন যাওয়ার সময় মা বলে ডেকে গেলো ।

আব্বাঃ ওই কুচ্ছিত মুখ ও তোমার মনে পড়ে আয়শা , আমার তো দেখেই ঘেন্না লেগে গিয়েছিলো । আর এগুলি হচ্ছে ওদের টেকনিক মনে হয় কোন ডাকাত দলের লোক ।

মাঃ না গো অপুর আব্বা আমার সেরকম মনে হয় না , ছেলেটি মনে হয় পাগল হবে ।

আব্বা ঃ এখন ওর কথা না তুল্লে হয় না আয়শা , তখন তো চেঁচিয়ে বাড়ি মাথায় তুলেছিলে ।

মা ঃ সে জন্য ই তো লজ্জা হয় ছিঃ ছিঃ ছেলেটি কি মনে করে আমাকে ধরেছিলো আর আমি কি মনে করেছিলাম । মাঝে মাঝে এমন মনে হয় আমার মনটা খুব কুচ্ছিত না হলে আমি ওসব মনে করি । কেমন করে মা ডেকে গেলো । আপনি যান না একবার থানায় ওরা নিশ্চয়ই অনেক মাড়ছে ছেলেটা কে । আর পাগল ছেলেটা মুখ বুজে সব সহ্য করছে , মনে হয় মা মা করে কাঁদছে ও । কার না কার বুকের ধন কে জানে আমার জন্য জেলে পচে মরছে ।

মায়ের একটা দীর্ঘশ্বাস শুনা গেলো , গলা জড়িয়ে এসেছে মায়ের , মনে হয় কান্না ও করছে একটু একটু । মা কি মনে করেছিলো সেটা অবশ্য আমি বুঝতে পারিনি তবে আমি জানি আমার মায়ের মন কুচ্ছিত না ।

আব্বা ঃ কি সব আবোল তাবোল চিন্তা করো না তুমি , ওদের আবার মা বাবা আছে নাকি কোথায় কি করে জন্ম হয়েছে তার কোন ঠিক নেই ওদের আবার মা । তুমি খালি খালি এসব চিন্তা না করে আমাদের বংশের কথা চিন্তা করো , মনে প্রানে পারথনা করো যেন তোমার গর্ভে একজন তেজি পুত্র সন্তান আসে যে আমাদের বংশের মর্যাদা ফিরিয়ে আনবে । নয়তো আমার আমত অপু কেও এমন অপমান সহ্য করতে হবে । যাও দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে আসো আয়শা । চেষ্টা তো করে যেতে হবে আমাদের ।

আমি বুজতে পারলাম এখন মা আর আব্বা আবার ওরকম করবে , সব সময় আব্বা যখন ছেলের কথা বলে তার পর পর ই আব্বা মায়ের কাপড় তুলে মায়ের উপর শুয়ে কেমন যেন ঘোঁত ঘোঁত করে শব্দ করে দুই তিন মিনিট ।

মাঃ আমি যে পাপ করেছি তাতে আমার কথা আর খোদা শুনবে না , এক মায়ের বুকের ধন কে জেলে পাঠিয়ে আমি কি আবার মা হতে পারবো , আপনি কালকে সকালেই যান থানায় ।

আব্বা ঃ ঠিক আছে যাবো যাবো এখন যাও দরজা বন্ধ করে দেয়ে এসো । আব্বার গলা কেমন যেন ফেস্ফেসে হয়ে এলো শেষের বাক্য বলতে গিয়ে ।

আমি বিছানা নড়ার শব্দ পেলাম । তারপর দরজা বন্ধের শব্দ । তারপর আবার আব্বার ঘোঁত ঘোঁত শব্দ দুই তিন মিনিট তারপর সব কিছু চুপ কয়েক সেকেন্ড । এখন মা দরজা খুলবে তাই আমি নিজের ঘরে চলে গেলাম ।

সেই রাতের পরদিন সেই ছেলেটি আব্বার সাথে এসে বাড়িতে হাজির ।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top