বাবা মানেই সব আবদারের এক অফুরন্ত ভান্ডার
বাবাঃ তোকে আর পড়বার টাকা দিতে পারবো না, তুই যেভাবে পারিস টাকা জোগাড় করে পড়ালেখা কর।
ছেলেঃ বাবা আমি তো চাকরি করি না কিভাবে বই কিনবো, আর কিভাবে পড়াশোনা করবো?
বাবাঃ আমি কিভাবে বলবো তুই কিভাবে পড়বি, আমার বয়স হয়েছে আমি আর পারছি না, কাজ করতে কষ্ট হয়।
এই কথা বলেই বাবা ঘুমাতে গেলেন। পড়াশুনো করবার প্রবল ইচ্ছে আমার, তাই কেদেই ফেললাম, এই ভেবে যে, আমার বোধ হয় আর পড়াশুনা করা হবে না, বাবার মত আকেও হয়তো রিক্সা চালাতে হবে।
যতই ভাবছি ততই কান্না পাচ্ছে।
আমি তখন মাত্র এস,এস,সি পাশ করে কোন ভাবে ইন্টার এ ভর্তি হয়েছি, কোন কাজই ভালোভাবে করতে পারি না। আশে পাসে কোথাও টিউশনির সুযোগ ও নেই যে, টিউশনি করে কোনভাবে পড়াশুনো টা চালিয়ে যাবো। কোন উপায়ই আমার কাছে ছিলো না, তাই ভাবলাম আগামি পরশুদিন ঢাকা চলে যাবো
আর সেখানে কোনো একটা চাকরি করবো। আমার পড়াশুনোর গল্পটা এখানেই শেষ, ছাত্রজীবন এর সমাপ্তি এই খানেই। এই কথাগুলো ভাবতে ভাবতে টেবিলেই ঘুমিয়ে পড়লাম।
খুব ভোরে ঘুম ভাঙলো, ঘুম থেকে উঠে বাবাকে বাসায় পেলাম না।
সকাল ১০ টার দিকে বাবা রিক্সা নিয়ে বাড়ি আসলো।
বাবাঃ তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে
ছেলেঃ কেন বাবা!
বাবাঃ যা বলছি তাই কর। বেশি কথা বলবি না।
খুব কষ্ট লাগছিলো বুকের বাম পাশে, বাবা বুঝি আমায় কোন গ্যারেজ এ দিয়ে দিবে, নাকি রিক্সা চালানো শিখাবে! বাবার সাথে মন খারাপ করে চলে গেলাম।
বাবা আমাকে এলাকার সবচাইতে বড় লাইব্রেরীতে নিয়ে গেলো, আর বলল সব বইগুলোর নাম বল,
আর দোকানদার কে বললো, "ও যে যে বই চায়, সব দিয়ে দ্যান"।
বাবার এই কথাগুলো শুনে আমার চোখে পানি চলে এলো, আসলে বাবা-মা তাঁর সন্তানকে কতটা ভালোবাসে তার হিসাব করা যাবে না।