এখনো অব্দি মানুষ পৃথিবীর গর্ভে যতদূর পৌঁছতে পেরেছে, সেটা ভূপৃষ্ঠ থেকে কেন্দ্রের দূরত্বের ০.১ শতাংশও নয়। অথচ কেন্দ্র অব্দি বিভিন্ন স্তরগুলো নিয়ে বিজ্ঞানীরা জেনে বসে আছে। এটা কিভাবে সম্ভব হলো? জানাচ্ছেন একজন ভূগতিবিদ্যার গবেষক।
মানুষের গভীরতম পদক্ষেপ
পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে পৃথিবীর কেন্দ্রের দূরত্ব প্রায় ৬৩৭০ কিলোমিটার। এই দূরত্ব এতটাই গভীর যে মানুষের পক্ষে এই গভীরতায় প্রবেশ করা সম্ভব নয়। বলতে গেলে এই গভীরতার ০.১%ও মানুষ অতিক্রম করতে পারেনি। মানুষ মাটির নিচে প্রবেশ করতে চায় মূলত দুটি কারণে। প্রথমত মাটির নীচে থেকে খনিজ সম্পদ সংগ্রহ করার জন্য। এই মুহূর্তে পৃথিবীর গভীরতম খনি রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায়, এমপোনেং (Mponeng) স্বর্ণখনি যা মাটির নিচে প্রায় ৪ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এবং ভবিষ্যতে আরও গভীরতা বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। এটাই এখনো পর্যন্ত পৃথিবীর গভীরতম স্থান যেখানে মানুষের পা পড়েছে। খনি ব্যতীত, অনেক সময় বৈজ্ঞানিক কাজকর্মের জন্য মাটির মধ্যে গর্ত করা হয়, যা থেকে পাথর সংগ্রহ করা হয় এবং সেই পাথর থেকে মাটির নিচের তাপমাত্রা এবং চাপ পরিমাপ করা যায় । এই জাতীয় গর্তকে ভূবিজ্ঞানের ভাষায় বলে বোরহোল (Borehole)। এখানে মানুষ সরাসরি পৌঁছায় না, কিন্তু যন্ত্র পৌঁছে যায় এবং পাথর তুলে আনে। পৃথিবীর গভীরতম বোরহোল প্রায় ১২ কিলোমিটার পর্যন্ত গেছে। রাশিয়ার পেচাংস্কি জেলায় রয়েছে এই বোরহোল যার নাম কোলা সুপারডিপ বোরহোল।মানুষের প্রচেষ্টা মাত্র ১২ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও, আমরা পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে একদম ভূপৃষ্ঠ পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরের বর্ণনা, তাদের বৈশিষ্ট সম্পর্কে জানতে পারি, শিলামন্ডল (lithosphere), গুরুমন্ডল (mantle), কেন্দ্রমন্ডল (core), তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিযুক্তিরেখা (discontinuity), যেমন, মোহোরভিসিক বিযুক্তি (Mohorovičić discontinuity), গুটেনবার্গ বিযুক্তি (Gutenberg discontinuity) ইত্যাদি সম্পর্কে সমস্ত বিবরণ স্কুলের পাঠ্য বইতে পাওয়া যায়। কিন্তু বৈজ্ঞানিকরা কি করে সংগ্রহ করে এই সব অজানা তথ্য?