পরীক্ষণের ইতিহাস বেশ পুরোনো। হাজার বছর ধরে মানুষের হাত ধরে পরীক্ষণের ফলে বিজ্ঞানের নিয়মনীতি ও ঘটনা আবিষ্কৃত হয়ে চলছে। কখনো পরীক্ষণ ব্যর্থ হয়েছে, কখনো অভাবনীয় সাফল্য পাওয়া গেছে। কিছু সাফল্য ও ব্যর্থতা আগের ধারণা পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। নতুন পথ দেখিয়েছে। এখানে সব বদলে দেওয়া ১০টি এক্সপেরিমেন্টের কথা বলা হলো।
১. আকার মাপেন এরাটোস্থেনিস
খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকে এরাটোস্থেনিস আলেক্সান্দ্রিয়া লাইব্রেরির গ্রন্থাগারিক ছিলেন। একটা বই পেলেন সেখানে। তাতে লেখা, বছরের বিশেষ এক দিনে মিসরের সাইনিতে বস্তুর ছায়া পড়ে না। প্রতিবছর ২১ জুন ঘটনাটা ঘটে, ঠিক মধ্যদুপুরে। কারণ, ওই সময় সূর্য মাথার ওপরে থাকে। সাইনি আলেক্সান্দ্রিয়ার দক্ষিণের এক শহর। এরাটোস্থেনিস সমান দৈর্ঘ্যের লাঠি ব্যবহার করেন। একই দিনে একই সময়ে দুই শহরে লাঠির ছায়ার দৈর্ঘ্য মাপেন এরাটোস্থেনিস। ছায়ার দৈর্ঘ্যের পার্থক্য ব্যবহার করে পৃথিবীর পরিধি মাপতে সক্ষম হন তিনি। ছায়া দুটির কৌণিক ব্যবধানও মাপেন তিনি। সেখান থেকে আলেক্সান্দ্রিয়া আর সাইনির মধ্যে কৌণিক ব্যবধান বের করেন প্রথমে। ব্যাপারটা এমন, আলেক্সান্দ্রিয়া থেকে সাইনি পর্যন্ত একটা বৃত্তচাপ আঁকলে পাওয়া যায় ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি। আমরা জানি, বৃত্তের মোট কৌণিক দৈর্ঘ্য ৩৬০ ডিগ্রি। ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি আসলে ৩৬০ ডিগ্রির ৫০ ভাগের এক ভাগ। পৃথিবীকে গোলাকার ধরে নিলে তার কৌণিক দৈর্ঘ্যও ৩৬০ ডিগ্রি। তাই আলেক্সান্দ্রিয়া ও সাইনির রৈখিক দূরত্বও পৃথিবীর পরিধির ৫০ ভাগের ১ ভাগ হবে। আলেক্সান্দ্রিয়া থেকে সাইনির দূরত্ব তখন স্ট্যাডিয়ন এককে মাপা হয়েছিল। কিলোমিটারে রূপান্তর করলে পাওয়া যায় ৮০০ কিলোমিটার। এটাকে যদি ৫০ দিয়ে গুণ করা হয়, তাহলেই পুরো পৃথিবীর পরিধি পাওয়া যাবে। এরাটোস্থেনিস পৃথিবীর পরিধি পেয়েছিলেন ৪০ হাজার কিলোমিটার। তিনি প্রথম প্রায় সঠিকভাবে পৃথিবীর পরিধি মাপেন।