What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

মনকুসুম by। নির্জন আহমেদ (1 Viewer)

Ochena_Manush

Mega Poster
Elite Leader
Joined
Aug 12, 2022
Threads
257
Messages
17,702
Credits
363,726
LittleRed Car
Automobile
Strawberry
Audio speakers
কুসুমটা চোখের সামনেই বড় হয়ে গেলো। পাঁচ ফিটের মতো লম্বা, চুলগুলো পাছা পর্যন্ত ছড়িয়ে, স্তন বাতাবীলেবুর মতো। দু বছর ওকে দেখিনি। ক্লাস টেনে উঠেছে সম্ভবত।
কাল রাতে এসে পৌঁছেই বলল, "ভাইয়া, আমার নাম কী বলতো?"
বললাম, "তোর নাম? কী যেন... ভুলে গেলাম... ফুল না?"
কুসুম আমার নাকে একটা ছোট্ট ঘুষি দিয়ে বলল, "জানতাম বলতে পারবে না। কুসুম বলে কোন মেয়ে আছে, তুমি জানো?"
বললাম, "রাগ করছিস কেন? বেকার থাকার জ্বালা তুই বুঝবি? চাকরির পড়াশুনা করছি। চাইলেও তোদের দেখা করতে পারি না। চাকরি পেয়ে নেই, দেখবি, প্রতি মাসে তোদের বাড়ি যাবো!"
ঠোঁট উল্টে বললো, "বেকার আছো, তাতেই সময় পাও না। আর চাকরি পেলে যাবে। তখন হয়তো বাড়ি এসেও তোমার দেখা পাবো না।
কুসুম আমার চাচাতো বোনা। দুবছর আগেও আমার কাছে আসতে চাইতো না ভয়ে। আর এর মধ্যেই এত পরিবর্তন! কথার খই ফুটছে মুখে।
মা বলল, "তোরা ঝগড়া পরে করিস। কুসুম, তুই আয়। খেয়ে নে আগে..."
কুসুম এসেছে শীতের ছুটিতে। গত বছর অনার্স শেষ করেছি আমি, ঠিক করেছি মাস্টার্স করব না, চাকরি পেলে চেষ্টা করে দেখবো পরে। চাকরির পরীক্ষা অবশ্য দেইনি একটাও এপর্যন্ত, কিন্তু নিজেকে বেকার ভাবতেই ভালো লাগে। এটা আমার একটা দুঃখবিলাস।
চাকরির জন্যে এমন সব বিষয় পড়তে হচ্ছে, যেগুলো পড়ার কোন মানে হয়না। ব্রাজিলের রাজধানীর নাম মুখস্ত করে লাভ কী, যেখানে একটা ক্লিকে সেটার নাম জানা যায়? একজন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ইন্টিগ্রাল ক্যালকুলাস করেই বা কী করবে? ব্যাংকের ক্যাশিয়ারের মায়ান সত্যতার ইতিহাস জানা না থাকলে কী ক্ষতি?
বসে বসে পত্রিকা থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করছিলাম। কুসুম আমার রুমে এসে বলল, "ভাইয়া, গান গাও না এখন? তোমার সেই ব্যান্ডটা এখন নেই?"
আমি পেপারটা মুড়ে রেখে বলল, "পেটে খাবার থাকলেই তো গান, তাই না? আগে খাদ্যের সংস্থান করি..."
বলল, "ব্যান্ডটা কি ভেঙ্গে গেছে?"
বললাম, "ভাঙ্গবে কেন? এখন আর নিয়মিত প্যাড হয় না। সবাই চাকরির ধান্দায়। আগে একটা কিছু ব্যবস্থা হোক। তারপর দেখা যাবে..."
কুসুম আমার সামনের চেয়ারে বসে বলল, "তোমাদের ব্যান্ড ভেঙ্গে যাবে দেখো। বাংলাদেশের গলিতে গলিতে ব্যান্ড। কয়টা ব্যান্ড টিকে থাকে?"
বললাম, "জ্যোতিষীর মতো কথা বলবি না তো। তোর লেখাপড়ার খবর কী? কোন ক্লাসে এবার?"
কুসুম একটা কালো স্কার্ট পরে আছে। কাল ব্যাকগ্রাউন্ডে আঁকা চিত্রকর্ম লাগছে কুসুমকে। বলল, "আমি কোন ক্লাসে পড়ি, সেটাও জানো না? যাও তোমার সাথে কথাই বলব না..."
কুসুম রাগ করে উঠতে যাচ্ছিল। আমি হাতটা চট করে ধরে বসালাম। বললাম, "আরে দাঁড়া। লেট মি গেস। তুই ক্লাস টেনে উঠবি এবারে, না? বুঝতেই পারছিস, আমাকে এঞ্জেলা মর্কেলের জন্ম সাল জিজ্ঞেস করলে, সঠিক উত্তর পাবি। কিন্তু এখনো আমি আমার মায়ের প্রিয় রঙ জানি না!"
বলল, "থামো তো... বড়ম্মু আজ আমাকে শপিং এ নিয়ে যাবে। তুমি যাবে আমাদের সাথে?"
বললাম, "শপিং? তোদের ব্যাগ বয়ে বেড়াতে পারব না আমি। তুই যা মায়ের সাথে..."
এই বাসায় আমি আর মা থাকি। বাবা থাকেন গ্রামে। সেখানে আমাদের একটা গরুর ফার্ম আছে, সেটার দেখাশুনা করতেই দিন যায় বাবার। মা মাসের পনেরো দিন বগুড়া থাকেন, বাকি পনেরো দিন গ্রামে। কুসুম অবশ্য বগুড়াতেই থাকে ছোটবেলা থেকে। ছোট চাচা বিয়ের পর আর গ্রামে থাকেননি বলা চলে। তল্পিতল্পা গুঁটিয়ে এখানে। দুই ইদে শুধু গ্রামে যান।
আম্মু কুসুমকে নিয়ে শপিং এ চলে গেলো। ফিরতে ফিরতে রাত...
আম্মু আসতেই বললাম, "মা, শপিং এ তো গেলে, ভালো কথা। আমি সন্ধ্যায় কী খাবো? নাস্তা করার মতো কিছু রেখে যেতে!"
আম্মু অবাক হয়ে বলল, "ওমা তুই খাসনি? আমি তো তোর জন্য নুডুলস করে রাখলাম। কুসুমকে বললাম, তোকে বলতে। কুসুম বলেনি?"
দেখলাম, কুসুম অপরাধী মুখে নিচের দিকে তাকিয়ে হাসছে। আমি কিছু না বলে নিজের রুমে চলে এলাম। কুসুম রুমে এসে বলল, "সরি ভাইয়া। আমি আসলে ভুলে গেছিলাম..."
"ব্যাপার না। আমি তাইমুরের দোকান থেকে পরোটা খেয়ে এসেছি!"
রাতে খাওয়ার পর আমরা চুটিয়ে গল্প করলাম। আম্মার মাইগ্রেনের ব্যথা উঠেছিল। খেয়েই মা চলে গেল বিছানায়।
আমার প্রেমিকা, ওর লেখাপড়া, ফেসবুক মিম, সিনেমা ইত্যাদি নিয়ে আড্ডা দিতে দিতে রাত অনেক হয়ে গেল। প্রায় ২টায় ঘুমালাম আমরা।
পরদিন ঘুম থেকে উঠেই দেখি, মা ব্যাগ গোছগাছ করছে। বলল, "তোর কবির দাদু মারা গেছে। আমি যাচ্ছি। তোরা থাক। জোছনাকে বলে যাচ্ছি, ও এসে রান্না করে দিয়ে যাবে..."কবির নামে আমার কোন দাদু আছে, জানিই না। বললাম, "কোন কবির দাদু?"
বলল, "তোর দাদুর চাচাতো ভাই!"
কুসুম বলল, "তুমি তো দেখি কাউকেই চেনো না, ভাইয়া!"
আম্মু বলল, "কুসুম থাকছে তোর সাথে। মিলেমিশে থাকিস..."
আম্মু চলে গেলো। আমি ব্যাস স্টান্ড পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে এলাম। আম্মু এতোবার গ্রামের বাড়ি যায় প্রতি মাসে, বাস কাউন্টারের লোকগুলোও চেনা হয়ে গেছে!আম্মু চলে গেলো। আমি ব্যাস স্টান্ড পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে এলাম। আম্মু এতোবার গ্রামের বাড়ি যায় প্রতি মাসে, বাস কাউন্টারের লোকগুলোও চেনা হয়ে গেছে!
বাড়ি ফিরে দেখি, কুসুম আমার ল্যাপটপের ছবিগুলো দেখছে। আমি বললাম, "এই কী দেখছিস রে? জানিস না, অনুমতি ছাড়া কারো ফোনে, ল্যাপটপে হাত দেয়া যায় না?"
কুসুম তাতে বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে বলল, "প্রাইভেসি নিয়ে এতো সচেতন হলে, ল্যাপটপে পাস দিয়ে রাখনি কেন?"
বললাম, "বাড়িতে তো কেউ নাই আমার ল্যাপটপ নাড়ার। আব্বু আম্মু বোঝেই না কিছু। তুই তো আর প্রতিদিন আসিস না!"
কুসুম কিছু না বলে আমার কক্সবাজার ট্যুরের পিক দেখতে লাগল। হঠাত একটা পিকে চোখ আটকে গেল ওর। সেই পিকে রিমা আমার গলা জড়িয়ে সমুদ্র সৈকতে দাঁড়িয়ে আছে! কুসুম চোখ বড় বড় করে বলল, "তোমরা মেয়েদেরও ট্যুরে নিয়ে যাও?"
বললাম, "যাই তো। মানে যেতাম। ভার্সিটির বন্ধু বান্ধবীরা মিলে কত ট্যুর দিয়েছি। আমি আর রিমা তো এক বিছানায় ঘুমিয়েছি পর্যন্ত!"
কুসুমের চোখ আরো বড় হয়ে গেল। বলল, "কী বললে? এক বিছানায় ঘুমিয়েছো!"
বললাম, "তো কী? তুই এক বিছানায় ঘুমানো সম্পর্কে কী জানিস?"
কুসুম বললে, "ছেলে মেয়ে এক বিছানায় ঘুমায় বিয়ে না হলে! ধ্যাত!"
আমি ওর থেকে ল্যাপটপটা কেড়ে নিয়ে বললাম, "তোকে বেশি পাকামি করতে হবে না। যা দেখ তো, জোছনা কী রান্না করছে। ওর কিছু লাগবে নাকি শুনে আয়!"
কুসুম দেখে এসে বলল, "জোছনা দুপুরের রান্না করে রেখেছে। ও বলল, রাতের তরকারি আনা নাই। তোমাকে কী খাবে নিয়ে আসতে বলল!"
অর্থাৎ বাজারে যেতে হবে! বাজারের ব্যাগটা হাতে নিয়ে, কুসুমকে বললাম, "কাঁচাবাজারে যাবি?"
কুসুম এক পায়ে খাঁড়া।
বাড়ি থেকে বেড়িয়েই রিক্সা নিলাম। কুসুম ক্লাস টেনে পড়লে কী হবে, পুরো নারী হয়ে উঠেছে এর মধ্যে। রিক্সায় ওর গায়ের সাথে আমার গা লেগে যাচ্ছিল! বাড়াটা চাগার দিচ্ছিল বড়শীতে গাঁথা মাছের মতো। অস্বস্তিকর অবস্থা!
আগে মাছ কিনতে গেলাম। কুসুমের মাছ খুব পছন্দ, ও নিজেই বলল।
মাছের বাজারে গিয়ে ও বলল, "জানো, মাছ খাওয়ার চেয়ে দেখতে বেশি ভাল লাগে আমার। আব্বুকে এতো বলি, মাছ কেনার সময় আমাকে নিয়ে যেতে, শোনেই না!"
"কী মাছ নেব বল। ইলিশ?"
বলল, "ইলিশের গন্ধ আমার ভালো লাগে না!"
+
এ বোধহয় একমাত্র বাঙ্গালী যার কাছে ইলিশের গন্ধ অসহ্য! বললাম, "তাহলে?"
কুসুম বলল, "তুমি বরং রুইটুই নাও!"
দুই কেজি ওজনের একটা রুই নিয়ে বাসা ফিরলাম। রিক্সায় ফেরার সময় আবার শরীরে শরীর লেগে স্পার্ক। আবার গুটিসুটি মেরে চিপকে বসে থাকা!
 

Users who are viewing this thread

Back
Top