অ-সুখ
Writer: bourses
Writer: bourses
মুখবন্ধ
সুদেষ্ণা আর সৌভিক... একে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল আজ থেকে প্রায় দশ বছর আগে... তারপর দিন, মাস, বছর কেটে গিয়েছে... তাদের প্রেম পর্ব আমরা জেনেছিলাম আমার এই ব্লগেই পোস্ট করা 'সুখ' গল্পটির থেকে... তারপর?
সুদেষ্ণা আর সৌভিককে নিয়েই আজ আবার শুরু করলাম তাদের জীবনের একটি অধ্যায় নিয়ে... নাম দিলাম 'অ-সুখ'...
চেষ্টা করেছি পাঠকদের সন্মুখে আমাদের সমাজের একটা সুপ্ত বাসনার কিছু পর্যালোচনা ও মনষ্ক বিশ্লষণ করার গল্পেটির মাধ্যমে... সমস্ত পাঠকদের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, দয়া করে আপনাদের মতামত দেবেন...
ধন্যবাদান্তে...
পর্ব ১
'ইশ... আমার জামাটা আয়রণ করে রাখো নি?' হাতের মধ্যে কোঁচকানো জামাটা ধরে বলে ওঠে সৌভিক...
'আরে... কেচে তো রেখেছি...' গলা তুলে উত্তর দেয় সুদেষ্ণা রান্নাঘর থেকে...
'শুধু কেচে রাখলে কি করে হবে শুনি... তুমি জানো আজ আমার একটা ইম্পর্টেন্ট মিটিং আছে, আর এই সাদা শার্টটাই আমি পরবো...' বিরক্তি ফোটে সৌভিকের মুখে...
'আরে... একটু নিজেই আয়রনটা করেই নাও না সোনা... দেখছো তো আমি ব্রেকফাস্টটা বানাচ্ছি...' সুদেষ্ণার উত্তর আসে...
'হ্যা... আমিও যেন ফ্রি বসে আছি...' গজগজ করতে করতে ইস্তিরিটা খুঁজতে থাকে সৌভিক... 'সেটাও কোথায় রেখেছ কে জানে... তাড়াতাড়ির সময় যদি একটা জিনিস হাতের কাছে পাওয়া যায়...'
রান্নাঘর থেকে সুদেষ্ণা বেরিয়ে দেখে টেবিলে তখনও ইশান বসে পাউরুটিটা মুখে নিয়ে চিবিয়ে যাচ্ছে... দেখে তাড়া দেয় ছেলেকে... 'একি ইশান... তুমি এখনও সেই একটা পাউরুটি নিয়েই বসে আছো? তাড়াতাড়ি খাও... দুধটাও তো পড়ে আছে... ওটাও তো খাও নি... উফ... সেটাও বলে দিতে হবে এখনও... ওটা শেষ করে তবে উঠবে... বুঝেছ?... ইশ... আমারও কত দেরী হয়ে গেলো... আমিও তো রেডি হবো...' শেষের কথা কটা কার উদ্দেশ্যে বলল তা কেউ জানে না... হয়তো নিজেকেই...
আজ দশটা বছর কেটে গিয়েছে সুদেষ্ণা আর সৌভিকের বিয়ের পর... সুখের সংসারে এসেছে ইশান... বছর ছয়েক তার বয়স মাত্র... দুজনেরই নয়নের মণি সে...
সুদেষ্ণার অফিসে কনসাল্টেন্ট হিসাবে এসেছিল সৌভিক... সেখানেই প্রথম দেখা তাদের... তারপর প্রেম... সৌভিককে ভালো লাগলেও নিজের থেকে উপযাযক হয়ে নিজের মনের কথা জানাতে যায় নি সুদেষ্ণা... সেটা তার সংস্কারে বেঁধেছিল, কিন্তু যখন সৌভিক এগিয়ে এসে প্রস্তাবটা দিয়েছিল, ফিরিয়েও দেয়নি তাকে... শসংশায় মেনে নিয়েছিল সৌভিকের প্রস্তাব... তবে ভেসে যেতে দেয় নি নিজেকে... বেঁধে রেখেছিল নিজের কুমারীত্ব বিবাহ অবধি দৃঢ় মানসিকতায়... প্রথমটা সৌভিকের সুদেষ্ণার এহেন শারীরিক সংসগ্র এড়িয়ে যাওয়াটাকে ভেবেছিল সুদেষ্ণার যৌন শীতলতা, কিন্তু পরবর্তি পর্যায়ে বিয়ের প্রথম রাতেই যে ভাবে উদ্দাম কামলীলায় সৌভিককে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল সুদেষ্ণা... সৌভিক স্বীকার করতে দ্বিধা করে নি যে সে একপ্রকার লটারী জিতে গিয়েছে... সুদেষ্ণাকে বিয়ে করে...
দশ দশটা বছর কেটে গিয়েছে... প্রতিটা দিন টক-ঝাল-মিষ্টির এক সঠিক সংমিশ্রণের মোড়কে... পাগলের মত একে অপরকে ভালোবেসেছে তারা দুজন দুজনায়... সে ভালোবাসা নির্ভেজাল, অকৃত্রিম... বিয়ের পর কিছু দিন তারা কোলকাতাতেই ছিল, তারপর সৌভিক শিফট করে মুম্বাই, আর সেই সুবাদে সুদেষ্ণাও তার পুরানো অফিস ছেড়ে নতুন জব নেয় মুম্বাইতে... এখন মোটামুটি সেটেল্ডই বলা যেতে পারে তাদেরকে...
সুদেষ্ণা বরাবরই নিজের শরীর সম্বন্ধে সচেতন... বরাবরই... তার ফিগার প্রকৃতই অন্য যে কোন মেয়ের কাছে রীতিমত ইর্ষার বস্তু... উজ্বল বাদামী দেহের দীর্ঘাঙ্গী সে... সাথে ভিষন সুন্দর সুসামাঞ্জস্য চওড়া কাঁধ, পূর্ণতাপ্রাপ্ত যথাযথ বুক, সরু কোমর, স্ফিত উদ্বত নিতম্ব, মাংসল সুগোল সুঠাম উরু... একেবারে বালিঘড়ির মত চেহারা তার... কিন্তু সেটা ছিল তার বিয়ের আগে... আর আজ বিয়ের পর এই দশ বছর কেটে যেতে যেন আরো ভরাট হয়ে উঠেছে সুদেষ্ণা... চেহারার সেই কৌমার্যের তম্বী চটক বদলে গিয়ে একজন পরিমার্জিত আর পরিনত মহিলায় রূপান্তরিত হয়েছে সে... ইশানএর পৃথিবীতে আসা তার ওপরে কোন বিরূপ প্রভাবই বিস্তার করতে পারে নি প্রকৃতি... উন্টে দেহ সম্পদে প্রকৃতি আরো যেন উজাড় করে দিয়ে গিয়েছে সারা শরীরটা জুড়ে... স্তন আরো ভারী হয়েছে, কিন্তু বিসদৃশ্যতা তৈরী করতে পারে নি সেখানে এতটুকুও, সঠিক তত্তাবধানে ঝুলে যায় নি ভারী হয়ে ওঠা স্তনজোড়া, তলপেটের ওপরে হাল্কা চর্বির পরতে নাভীর গভীরতা লাভ করেছে, আরো একটু ভারী আর স্ফিত হয়েছে নিতম্বও... স্লথতা থাবা বসাতে পারেনি মাংসল উরুতে... যৌবনের শীর্ষে পৌছিয়ে আরো যেন প্রস্ফুটিত হয়ে উঠেছে দেহের প্রতিটা চড়াই উৎরাই...
সুদেষ্ণা ছেলেদের সাথে খুবই সাচ্ছন্দ... আগেও যেমন ছিল, এখনও তেমনই... আর সৌভিকও তার এই মানসিকতা ভিষন ভাবে সমর্থন করে, বরঞ্চ একটু বেশিই যেন করে বলে এক এক সময় মনে হয় সুদেষ্ণার... বাড়িতে অফিসের কোন পুরুষ কলিগ কখন এলে তাকে নিয়ে টিজ্ করে ঠিকই, কিন্তু সেটা যে শুধু মাত্র রসিকতা, সেটা বুঝতে অসুবিধা হয় না তার... আর সেই কারনেই হয়তো আজ দশ বছর পরও তাদের মধ্যের সেই মধুর ইকোয়েশনটা এখনও অটুট রয়ে গিয়েছে... তাদের মধ্যের শুধু মাত্র ভালোবাসাই নয়, বিশ্বাসেও সামান্যতম টোল খায়নি...
'তুমি যাও, আজ আমি অফিস যাবার পথে ইশানকে স্কুলে নামিয়ে দেবো... তোমাকে আজ আর ওকে নিয়ে দৌড়াতে হবে না... তোমার মিটিং আছে, তাড়াতাড়ি অফিসের জন্য বেরিয়ে পড়ো...' ঘরে ঢুকে সৌভিকের বুকের ওপরে হাত রেখে বলে সুদেষ্ণা... 'আর... সরি সোনা... শার্টটা আয়রণ করতে ভুলে গিয়েছিলাম তাড়াতাড়িতে... রাগ করেছ?' হাত তুলে রাখে সৌভিকের পরিষ্কার সেভ করা গালের ওপরে... সৌভিকের সদ্যমাখা ডেভিড বেকহ্যাম পার্ফিউমের গন্ধে ঘরটা যেন ভরে রয়েছে... গাঢ় চোখে তাকায় স্বামীর চোখের পানে... পায়ের আঙুলে ভর রেখে শরীরটাকে একটু তুলে ছোট্ট একটা চুমু এঁকে দেয় সৌভিকের সুরভিত গালের ওপরে...
Hidden content
You need to reply to this thread or react to this post in order to see this content.
Hidden content
You need to reply to this thread or react to this post in order to see this content.
Last edited: