What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

শিশু অমনোযোগী? (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
CWQ7rG1.jpg


শিশু পড়তে বসেছে। খুব সহজ একটা গণিতের হিসাব মেলাতে পারছে না। শিক্ষক বোঝাতে বোঝাতে ক্লান্ত। গড়পড়তা বাঙালি জীবনে অনেকেই এমন দৃশ্যের সম্মুখীন হন। কেন এ রকম হয়? কেন কোনো কোনো শিশু মনোযোগ দিতে পারে না? কেন নিবিড়ভাবে নিজেকে পড়ায় ও কাজে নিযুক্ত করতে পারে না? প্রশ্ন রাখি বিশেষজ্ঞ সমীপে।

শিশুর মনোজগতে কিছুই হঠাৎ করে হয়ে যায় না। কীভাবে বেড়ে উঠছে শিশু, তার ওপরেই নির্ভর করে মনঃসংযোগের ক্ষমতা। মনোযোগী করে তুলতে দুই বছর বয়স থেকেই শিশুকে সুস্থ, স্বাভাবিক রোজনামচার আওতায় আনতে হবে। এটি কিন্তু একেবারে ধরাবাঁধা লিখিত কোনো কিছু নয়, কেবল সময়মতো সব কাজে অভ্যস্ত করে তোলা। সময়ের কাজ সময়ে করার অভ্যাস হলে শিশু যখন যেটা করবে, সেটাতেই মনোযোগ দেবে। সৃজনশীল, আনন্দময় কাজে শিশুর মনোযোগ বাড়ে, হয় বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশও। বলছিলেন ঢাকার গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্সের শিশু বিকাশ ও সামাজিক সম্পর্ক বিভাগের নার্সারির সহযোগী অধ্যাপক মওসুফা হক।

গুণগত সময় দিন শিশুকে

ব্যস্ততম বাবা-মাকে নিয়ে গড়ে ওঠা একক পরিবারে শিশুর তেমন কিছু করার নেই, তাই ডিজিটাল ডিভাইসই ভরসা। এ রকম ডিভাইস-নির্ভর শিশুর মনোযোগে ঘাটতি থাকতেই পারে। তাই ডিভাইসের ব্যবহার সীমিত করে নিজেরা সময় দিন শিশুকে। শিশুকে নিয়ে মজার কাজে সময় কাটান। হয়তো বাজারের সব রং নিয়ে এসে আপনি আশা করছেন, সে ছবি এঁকে সময় কাটাবে। কিন্তু তার আঁকা ছবিটা মনোযোগ দিয়ে দেখা কিংবা প্রশংসা করার দায়িত্বের কথা বেমালুম ভুলে গেলেন। সেই শিশু আর ছবি আঁকায় আনন্দ না-ই পেতে পারে। বরং শিশুর সঙ্গে রং ছড়িয়ে-ছিটিয়ে নিজেও বসে যান যখনই পারেন। তার আঁকা ছবির প্রশংসা করুন। শিশুর সঙ্গে খেলুন, গল্প করুন। বই পড়ে শোনান, বেড়াতে নিয়ে যান। এসব করতে করতে সে কী শিখল, খেলার ছলে সেটাও জিজ্ঞেস করুন তাকে। খেলতে খেলতেই প্রথম পর্যায়ের গণিত বুঝে যেতে পারে শিশু, সমৃদ্ধ হতে পারে তার শব্দভান্ডার, বাড়তে পারে ব্যবহারিক জ্ঞানের পরিধি। এগুলো মাথায় রেখেই শিশুকে সময় দিন। শিশুকে সঙ্গে নিয়ে গাছ ও প্রাণীর পরিচর্যা করুন। ভার্চ্যুয়াল জগতের চাইতে বাস্তব জগতের 'অ্যাডভেঞ্চার' আরও বেশি, এই জগতের আনন্দ আরও বেশি আকর্ষণীয়। সেই জগতের দ্বার উন্মোচন করুন শিশুর সামনে। শিশুর সামনে নিজের ডিভাইস-নির্ভরতাও নিয়ন্ত্রণ করুন অবশ্যই। আপনি শিশুর প্রতি মনোযোগ না দিলে শিশুও একসময় তেমনটাই করবে।

একঘেয়েমি এড়িয়ে

শিশুকে সারাক্ষণ পড়ালেখা করতে বলবেন না। স্কুলের আগে-পরে পড়তে বসানো ঠিক নয়। একবার মন দিয়ে পড়লে, এরপর স্বাধীনভাবে সময় কাটাতে পারবে, এই ভরসা দিন। শিশুর অপছন্দের কাজে তাকে জোর করে নিযুক্ত করবেন না। শিশুর বয়স অনুযায়ী ঘরের কাজের সময়ও সঙ্গে নিন তাকে, কিছু কাজ শিশু নিজেও করুক। তবে কোনো কাজ চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। নানা রকম খেলাধুলা করাতে পারেন বসে, মাথা খাটিয়ে কিংবা দৌড়ঝাঁপের মাধ্যমে। সমবয়সীদের সঙ্গে খেলার সুযোগ করে দিন। তার চাহিদা এবং মানসিক বৈশিষ্ট্যকে বিচার করতে হলে নিজে পার করে আসা সেই বয়সের ভালো লাগা-মন্দ লাগার কথা মনে করুন। কিছুটা পড়তেও পারেন সন্তান পালন বিষয়ে। কিছু বয়সের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যই হয় কথা না শোনা। সেটাও জানা থাকুক অভিভাবকের।

দোষারোপ করবেন না

কড়া শাসন শিশুর জন্য নেতিবাচক বলেই জানালেন মওসুফা হক। শারীরিক আঘাত কিংবা তিরস্কার শিশুর জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। মনে রাখতে হবে, ভালোবাসা দিয়ে সব জয় করা যায়। শিশুকে ভালোবেসে, আদর করে, তার বয়স উপযোগী উপায়ে বুঝিয়ে, সময় দিয়ে তার ব্যক্তিত্বের নেতিবাচকতা দূর করতে চেষ্টা করুন। শিশুর যা কিছু আপনার পছন্দ নয়, সেগুলোর জন্য তাকে দায়ী করবেন না। পরিবার এবং পরিবেশের ওপর নির্ভর করে শিশুর বেড়ে ওঠা। তাই শিশুর সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক তৈরি করুন। তার মতামতকে প্রাধান্য দিন। শিশুর সামনে নিজেরা মতবিরোধে জড়াবেন না। সঠিক সময়ে শিশুর বিকাশে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া না হলে, পরবর্তী সময়ে মনোযোগ বাড়ানোর কাজটা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কখনো কখনো শিশু মনোবিজ্ঞানীর সাহায্যও নিতে হতে পারে।

শিশুর সব ধরনের আচরণ তার কাছে স্বাভাবিক। তাই কোনো বিষয়ে তাকে মনোযোগী করে তুলতে সেই দিকে তার আগ্রহ বাড়ানোর বিকল্প নেই। সে যখন ভালোবেসে পড়তে বসবে, গণিতের হিসাব মেলানো তার কাছে তখন কোনো বিষয়ই না।

লেখক: রাফিয়া আলম, ঢাকা
 

Users who are viewing this thread

Back
Top